বুধবার,

১৮ জুন ২০২৫

|

আষাঢ় ৪ ১৪৩২

XFilesBd

ব্রেকিং

২০২৫-২৬ অর্থবছরের ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছেন অর্থ-উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। মোট বাজেট -৭,৯০,০০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা-৫,৬৪,০০০ কোটি টাকা বাজেট ঘাটতি -২,২৬,০০০ কোটি টাকা (জিডিপির ৩.৬%) জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা-৫

নয়াপ্রযুক্তি সহজ করে তুলেছে গাড়ি চালানো

নিজস্ব সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ১৩:০৮, ১৭ জুন ২০২৫

আপডেট: ১৩:১১, ১৭ জুন ২০২৫

নয়াপ্রযুক্তি সহজ করে তুলেছে গাড়ি চালানো

প্রতিনিয়ত বদল হচ্ছে প্রযুক্তি। সেদিক থেকে বিশেষভাবে এগিয়ে আছে অটোমোবাইল শিল্প। নিত্যকার সুবিধার চেয়েও বাড়তি ফিচার দিয়ে যে যার মতো সাজিয়ে তুলতে ব্যস্ত। আর এভাবেই বিশ্বে চরম প্রতিযোগিতায় নেমেছে গাড়িনির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো।

ড়ি চালানো এক সময়ে শুধু দক্ষ চালকদের কাজ ছিল। অভিজ্ঞতা ও কৌশল ছাড়া সড়কে নিরাপদভাবে গাড়ি চালানো কঠিন ছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তির যে অভাবনীয় অগ্রগতি ঘটেছে, তাতে গাড়ি চালানো শুধু সহজই হয়নি, বরং অনেক বেশি নিরাপদ, স্মার্ট ও আরামদায়ক হয়ে উঠেছে। “গাড়ি চালানো সহজ করে তুলছে নতুন প্রযুক্তি” — এই বাক্যটি আজ শুধু একটি শ্লোগান নয়, বরং বাস্তব জীবনের প্রতিচ্ছবি।


এই লেখায় আমরা জানব কীভাবে আধুনিক প্রযুক্তি গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতাকে বদলে দিচ্ছে, কী কী নতুন ফিচার আমাদের জীবনকে সহজ করছে, আর ভবিষ্যতে কী ধরনের উদ্ভাবন আমাদের সামনে অপেক্ষা করছে।


? স্বয়ংক্রিয় গাড়ি: চালক ছাড়াই গন্তব্যে পৌঁছানো
স্বয়ংক্রিয় বা Self-driving car প্রযুক্তি বর্তমানে গাড়ি চালনার সবচেয়ে আলোচিত ও চমকপ্রদ উদ্ভাবন। এ ধরনের গাড়িতে সেন্সর, ক্যামেরা, রাডার এবং AI সফটওয়্যার ব্যবহার করে গাড়িকে নিজে নিজে রাস্তা চিনে চলতে সাহায্য করা হয়। এটি কেবল ড্রাইভিং সহজ করে তোলে না, বরং দুর্ঘটনার ঝুঁকিও অনেক কমিয়ে আনে।


? পার্কিং সহায়ক প্রযুক্তি
অনেক নতুন গাড়িতে Automatic Parking Assist প্রযুক্তি যুক্ত রয়েছে। আপনি শুধু পার্কিংয়ের জায়গা দেখিয়ে দিলেই হবে, বাকিটা গাড়িই নিজে করবে। বিশেষত শহরের ব্যস্ত এলাকায় এটি অত্যন্ত কার্যকরী।


? লেন-অ্যাসিস্ট ও ব্লাইন্ড-স্পট ডিটেকশন
অনেক সময় আমাদের গাড়ির পাশে থাকা যানবাহন চোখে পড়ে না। Blind Spot Detection প্রযুক্তি সেই সমস্যার সমাধান দিচ্ছে। এটি গাড়ির পেছনের দিকের সেন্সরের মাধ্যমে পাশের যানবাহন শনাক্ত করে সতর্ক করে। একইভাবে Lane Keeping Assist প্রযুক্তি গাড়ি লেনে রাখতেও সাহায্য করে। ড্রাইভিংয়ের সময় অসাবধানতা রোধে এসব প্রযুক্তির কার্যকারিতা এখন অনস্বীকার্য।


? ট্রাফিক ও রাস্তাঘাটের তথ্য তাৎক্ষণিক পাওয়া
জিপিএস ও Real-Time Traffic Update প্রযুক্তির ফলে এখন আর অজানা রাস্তায় হারিয়ে যাওয়ার ভয় নেই। আপনার গন্তব্য অনুযায়ী কোন রাস্তা ফাঁকা, কোথায় জ্যাম — সব তথ্য আগেই জানিয়ে দেয় প্রযুক্তি। এর ফলে সময় ও জ্বালানি দুটোই সাশ্রয় হয়।


? অ্যাডাপটিভ ক্রুজ কন্ট্রোল (Adaptive Cruise Control)
এই প্রযুক্তি মূলত গাড়িকে নির্দিষ্ট গতি ও দূরত্ব বজায় রেখে অন্য যানবাহনের সঙ্গে চলতে সাহায্য করে। এতে চালকের চাপ অনেকটাই কমে যায়, বিশেষ করে হাইওয়ে ড্রাইভিংয়ে।


? ব্যাকআপ ক্যামেরা ও সেন্সর
বর্তমানে প্রায় প্রতিটি গাড়িতেই Rear View Camera এবং Parking Sensor থাকে। গাড়ি পিছনে নেওয়ার সময় কোনও বাধা বা বাচ্চা থাকলে এই প্রযুক্তি সতর্ক সংকেত দিয়ে জানিয়ে দেয়। এটি দুর্ঘটনা প্রতিরোধে অসাধারণ ভূমিকা রাখে।


? ড্যাশবোর্ড স্মার্ট ডিসপ্লে ও কন্ট্রোল
নতুন গাড়িগুলোর Smart Dashboard এবং Touchscreen Display চালকের জন্য গাড়ি নিয়ন্ত্রণ আরও সহজ করে তুলছে। এক জায়গা থেকেই আপনি মিউজিক, কল, নেভিগেশনসহ নানা ফিচার কন্ট্রোল করতে পারেন।


? কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও মেশিন লার্নিং
এখন গাড়িগুলিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ও মেশিন লার্নিং ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি গাড়িকে চালকের অভ্যাস, রাস্তার ধরন, সময় ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। যেমন: রাত হলে হেডলাইট নিজে চালু হওয়া বা বৃষ্টি হলে ওয়াইপার চালু হওয়া।


? বিদ্যুৎচালিত ও স্মার্ট গাড়ি
গাড়ির জ্বালানির সমস্যা দূর করতে Electric Vehicle (EV) প্রযুক্তি নতুন পথ দেখিয়েছে। এসব গাড়ি শুধু পরিবেশবান্ধব নয়, বরং প্রযুক্তি নির্ভর স্মার্ট সিস্টেমেও পূর্ণ। আপনি স্মার্টফোন অ্যাপ দিয়ে চার্জিং, অবস্থান নির্ণয়, এমনকি লক/আনলকও করতে পারেন।


ভবিষ্যতের প্রযুক্তি: কী আসছে সামনে?
নতুন নতুন উদ্ভাবনের ধারায় গাড়ি চালনার ভবিষ্যৎ আরও বেশি স্বয়ংক্রিয় ও নিরাপদ হতে চলেছে। নিচে কিছু সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ প্রযুক্তির উল্লেখ করা হলো:
?Augmented Reality Windshield: যেখানে গাড়ির কাঁচেই রাস্তাঘাটের তথ্য, গন্তব্যের দিকনির্দেশ ও সতর্কতা দেখা যাবে।
?Biometric Vehicle Access: ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা ফেস আইডির মাধ্যমে গাড়ি চালু করা।
?Vehicle-to-Vehicle Communication (V2V): যেখানে এক গাড়ি অন্য গাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করে দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাবে।

নতুন প্রযুক্তির কল্যাণে গাড়ি চালানো এখন আর শুধুমাত্র অভিজ্ঞ চালকদের কাজ নয়। স্বয়ংক্রিয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, নিরাপত্তা প্রযুক্তি, রিয়েল-টাইম আপডেট, এবং স্মার্ট কন্ট্রোল সিস্টেম এখন যে কাউকেই গাড়ি চালনায় দক্ষ করে তুলছে। “গাড়ি চালানো সহজ করে তুলছে নতুন প্রযুক্তি” — এই বাক্য এখন বাস্তবতা, আর এর ফলাফল আমরা প্রতিদিন রাস্তায় দেখছি।