রোববার,

১১ মে ২০২৫

|

বৈশাখ ২৮ ১৪৩২

XFilesBd

শিরোনাম

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু শনিবার উজানের দেশগুলোর কাছে বন্যা পূর্বাভাসের তথ্য চাওয়া হবে : পানি সম্পদ উপদেষ্টা নোয়াখালীতে পানি কমছে, ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন বাতিলে হাইকোর্টে রিট দেশের ১২ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রকে অপসারণ শেখ হাসিনা মেনন ইনুসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হত্যাকান্ড, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিচার হবে নিজেদের রাজাকার বলতে তাদের লজ্জাও করে না : প্রধানমন্ত্রী সাবেক আইজিপি বেনজীরের সম্পদ ক্রোকের নির্দেশ আদালতের হবিগঞ্জের কার ও ট্রাকের সংঘর্ষে নারীসহ নিহত ৫ যুদ্ধ ব্যয়ের অর্থ জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় ব্যবহার হলে বিশ্ব রক্ষা পেত: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী প্রাণি ও মৎস্যসম্পদ উন্নয়নে বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর বিএনপি নেতারা সন্ত্রাসীদের সুরক্ষা দেওয়ার অপচেষ্টা করছে : ওবায়দুল

ভিক্ষা নয় রোজগার করে বাঁচতে চায় খোকসার প্রতিবন্ধী অমরেশ 

রঞ্জন ভৌমিক, খোকসা কুষ্টিয়া

প্রকাশিত: ০৫:০৫, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ভিক্ষা নয় রোজগার করে বাঁচতে চায় খোকসার প্রতিবন্ধী অমরেশ 

পঙ্গুত্বের কাছে হার না মানা অমরেশ অধিকারী। হাটে-ঘাটে ও ধর্মীয় উৎসব আঙ্গিনায় বাদাম-চানাচুর বিক্রি করেন। কিন্তু  ভিক্ষা করতে রাজি নন তিনি। শারীরিক অক্ষমতার ফলে চানাচুর তৈরি করতে পারেন না। তাই আয়-রোজগার খুব কম হয়। তাদের ৫ জনের জীবন সংসার চলে অনাহারে-অর্ধাহারে।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার জানিপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের একতারপুর গ্রামের মৃত অভিমান্য অধিকারীর ছেলে প্রতিবন্ধী অমরেশ অধিকারী। সাত বছর বয়সে পোলিও রোগে তার দুটো পা হারিয়ে পঙ্গু হয়ে যায়। এভাবে  খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে দশম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। বছর দশেক আগে তার বাবার মৃত্যুর পর সংসারের দায়িত্ব এসে পরে তার কাঁধে। পঙ্গুত্বের অভিশাপ নিয়ে জীবন যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পরেন। বাবার চানাচুর তৈরির পেশাকে বেছে নেন। গ্রামের রাস্তার মোড়ে চানাচুরের দোকান দেন। সংসারের চাহিদা বাড়ায় ভ্যানে চড়ে গ্রামের হাট-ঘাট ও ধর্মীয় উৎসব আঙ্গিনায় দোকান দিতে শুরু করেন। ভ্যান ভাড়া দিয়ে পোষায় না। কয়েক বছর আগে স্থানীয় ভাবে কাঠের চাকার তৈরী ছোট হুইল চেয়ারে দোকানের মালামাল নিয়ে চলাফেরা করতো। পরে স্থানীয় এক ব্যক্তি বাই-সাইকেলের যন্ত্রাংশ দিয়ে একটি হুইল চেয়ার বানিয়ে দিয়েছিল সেটিও অকেজো হওয়ার পথে।

প্রতিবন্ধীর বৃদ্ধা মা সবিতা রানী, দুই সন্তান  ও স্ত্রী পঞ্চমী রানী শর্মাকে নিয়ে বাবার ভিটার পুরাতন ঘরে বসবাস করছেন। এক কক্ষের পুরোনো দিনের ইটের তৈরী ঘরটিও  জীর্ণ হয়ে গেছে। সামান্য বৃষ্টিতে ঘরের চালা দিয়ে পানি পড়ে সব ভিজে যায়। নিজের মা সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে অনেক রাত তাদের বসে কাটাতে হয়। অমরেশের নিজের চলাচলের চাকাওয়ালা হুইল চেয়ারটি অতিশয় পুরাতন হয়ে গেছে। এর পেছনে মেরামত ব্যয়ও বেড়ে গেছে। গাড়িটি খারাপ থাকায় ঠিকমত হাট ঘাটে যেতে পারছে না। তবুও সংসারের সবার খাবারের যোগান দিয়ে গিয়ে তাকে জলকাঁদা মাড়িয়ে ওই গাড়ি ঠেলে চলাচল করতে হচ্ছে।

প্রতিবন্ধী অমরেশের মা জানান, তার আরও চার ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। তারা সবাই অভাবী। অমরেশের চিকিৎসা করতে কলিকাতা পর্যন্ত গিয়েছেন। সেখানে চিকিৎসা দিয়ে মাজা থেকে হাত পর্যন্ত উন্নতি হয়েছিল। পরে আর টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেননি  । ছেলের চিকিৎসা করতে গিয়ে তিনি সর্বশান্ত হয়েছেন।  ছেলে চলাচল ও ব্যবসার মালামাল আনা নেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কমকর্তাদের কাছে একটি ব্যটারী চালিত হুইল চেয়ারের দাবি করেন তিনি।

প্রতিবন্ধী অমরেশ জানায় , পুরোনো লক্কর-ঝক্কর হুইল চেয়ার বসে চালাতে খুব কষ্ট হয়। তাই মাঝে মধ্যে বিকল পা দুটো মুড়িয়ে  শুধু মাজার উপর ভর করে হাতের জোড় দিয়ে প্যাডেল করতে হয়। এক মাইল পথ চলতে  কমপক্ষে দুই বার বিশ্রাম নিতে হয়। তার একটা গাড়ি খুবই প্রয়োজন। বাবার তৈরি  ঘরটির চালা দিয়ে পানি পড়ে।  তার ইচ্ছা একটা ঘরের। যেখানে রাতে সে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারবেন।