শনিবার,

২৭ এপ্রিল ২০২৪

|

বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

XFilesBd

শিরোনাম

যুদ্ধ ব্যয়ের অর্থ জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় ব্যবহার হলে বিশ্ব রক্ষা পেত: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী প্রাণি ও মৎস্যসম্পদ উন্নয়নে বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর বিএনপি নেতারা সন্ত্রাসীদের সুরক্ষা দেওয়ার অপচেষ্টা করছে : ওবায়দুল

সেতুতে যেভাবে চলছে মোটরসাইকেল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০৮:৩১, ২৯ জুন ২০২৩

সেতুতে যেভাবে চলছে মোটরসাইকেল

  উদ্বোধনের পর থেকে বিধিনিষেধ থাকলেও ঈদুল ফিতরের আগে মোটরসাইকেলে পদ্মা সেতু পারাপারের অনুমতি দেয় সরকার। গত ২০ এপ্রিল ভোর থেকে স্বপ্নের এ সেতুতে চলাচল শুরু হয় মোটরসাইকেলের। সেতুর বাম পাশের সার্ভিস লেন দিয়ে চলছে এ যান। এক্ষেত্রে মোটরসাইকেলের সর্বোচ্চ গতি থাকবে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার।

 ঈদুল ফিতর ঘিরে গত ১৮ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয় বলে জানিয়েছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

 তখন মন্ত্রী জানান, পরীক্ষামূলকভাবে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনোভাবেই সার্ভিস লেনের বাইরে মূল সেতুতে মোটরসাইকেল আসতে পারবে না। নির্ধারিত হারে টোল দিতে হবে। যদি নিয়ম মানা না হয় সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হবে। এরই ধারাবাহিকতায় মোটরসাইকেল চলছে পদ্মা সেতুতে।

 ২০২২ সালের ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু উদ্বোধন করার পরদিন ২৬ জুন যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। সেতুতে ঢল নামে মোটরসাইকেল আরোহীদের। সেতুর ওপর উঠে দল বেঁধে আনন্দ-উল্লাস আর হৈ-হুল্লোড়ে মাতেন তারা।

 ওইদিন ভোর থেকে সবার চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় পদ্মা সেতু। উদ্বোধনের পর প্রথম দিনে অন্তত ৪৫ হাজার যানবাহন পারাপার হয়। এরমধ্যে মোটরসাইকেল ছিল ২৭ হাজার। ওই দিন রাতে সেতুতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই তরুণ নিহত হন। এরপর সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তে ২৭ জুন থেকে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ করে দেয় সেতু কর্তৃপক্ষ।

 পরে অবশ্য সচিবালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, আপাতত পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলতে দেওয়া নিয়ে কোনো ভাবনা নেই।

 মোটরসাইকেল চালকেরা বিকল্প হিসেবে ট্রাকে করে মোটরসাইকেল পারাপার করা হতো। সেতুতে মোটরসাইকেলের নির্ধারিত টোল ১০০ টাকা হলেও ট্রাকে একটি মোটরসাইকেল পার করতে খরচ হতো ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা।

 চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি পদ্মা সেতু দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপের বিরুদ্ধে করা রিট উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করা হয়েছিল। হাইকোর্টের বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রিটটি উত্থাপিত হয়নি বলে খারিজ করে দেন।

 পদ্মা সেতু দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টির চেয়ারম্যান কেএম আবু হানিফ হৃদয় ২০২২ সালের ১২ ডিসেম্বর রিটটি করেছিলেন। আদালতে ওই রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইয়ারুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।

 পরে আইনজীবী ইয়ারুল ইসলাম বলেন, পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল সাময়িকভাবে সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে বলে শুনানিতে এসেছে। পরবর্তী সময় এ বিধিনিষেধ তুলেও নেওয়া হতে পারে বলে আদালত বলেছেন। কোন সড়কে কোন গাড়ি চলবে, সে বিষয়ে সরকার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। যেমন অনেক সড়কে ভ্যানগাড়ি, রিকশা যেতে দেওয়া হয় না, যা সরকারের একধরনের নীতি। এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবেন না বলে জানান আদালত। এরপর রিটটি ফেরত নেওয়ার কথা জানানো হয়। পরে আদালত রিটটি উত্থাপিত হয়নি বলে খারিজ করে দেন।

 পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলের নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা রিট আবেদনের ওপর আরও চার সপ্তাহের জন্য স্ট্র্যান্ডওভার (মুলতবি) করেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, এসময়ের মধ্যে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটা দেখে পরবর্তী আদেশ দেবেন।

 গত ২৯ মার্চ হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে ওইদিন রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তৈমুর আলম খন্দকার ও আইনজীবী মো. ইয়ারুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। এরপর মোটরসাইকেল চলাচল করায় সেই রিটের কাযর্কারিতা শেষ হয়ে গেছে।

 এ বিষয়ে রিটকারী আইনজীবী মো. ইয়ারুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি দেওয়ার পর আদালত বলছেন, এখন তো মোটলসাইকেল চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। যদি আবার বন্ধ করা হয় তখন দেখা যাবে। আপাতত রিটটি অকার্যকর।