
একের পর এক ঘটছে নানান সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। চলছে গুলি, হামলা ও হত্যাচেষ্টা। অথচ প্রশাসন নির্বিকার। সম্প্রতি
কুষ্টিয়ার খোকসায় গরু খাওয়ানোর ঘাস কাটায় বাধ দেওয়া কেন্দ্র করে সন্ত্রাসীদের ছোড়া ও ধারালো অস্ত্রের কোপে এক যুবক আহত হয়েছেন। কদিন আগে এলাকার বিশিষ্ট সমাজকর্মী দিলীপ সেনের বাড়ি দখলের চেষ্টা চালায় সন্ত্রাসীরা। প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে তার স্ত্রী সরকারি স্কুল শিক্ষিকা অন্জনা রানী সন্যাসী ও ইন্জিনিয়ারিং পডুয়া ছেলেকে হত্যার চেষ্টা চালায়। এ ঘটনায় সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয়দাতা হিসেবে স্থানীয় থানার কতিপয় পুলিশ সদস্যর নাম এলেও তাতে কোন সমাধান হয়নি। উল্টো নতুন সব ঘটনা ঘটে চলেছে একের পর এক।
বুধবার দিনগত রাত সাড়ে ১০ টার পর উপজেলা সদরের পৌর এলাকার পাতেলডাঙ্গী গ্রামের মধ্যে রাস্তায় হাসান (৩৮) এর উপর সন্ত্রাসীরা কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়। এ সময় গুলিবিদ্ধ হাসান রাস্তায় লুটিয়ে পরলে তাকে ধারালো অস্ত্রদিয়ে কোপায় সন্ত্রাসীরা। ৫/৬ জন সন্ত্রাসীরা এ হামসলায় অংশ নেয়। আগ্নেয় অস্ত্রের গুলি শব্দ ও আহতে যুবকের চিৎকারের গ্রামবাসী এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা মাঠে নেমে যায়। স্থানীয়রা আহত যুবকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে নিয়ে যায়। পরে রাতেই তাকে কুষ্টিযা জেনারেল হাসপাতাল ও সর্বশেষ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতারে স্থানান্তর করা হয় বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ থানা থেকে হামলার স্থল দেড় কিলোমিটার দূরত্ব হলে পুলিশ পৌঁচ্ছায় কয়েক ঘন্টা পরে।
গুলি বিদ্ধ আহত হাসান পৌর এলাকার ১ নম্বর ওয়ার্ডের পাতিলডাঙ্গী গ্রামের লোকমান মন্ডলের ছেলে। সে পেশায় একজন ইজারা দার।
বুধবার সকাল ১১ টার পর পাতিলডাঙ্গী গ্রামে সরেজমিন গিয়ে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ ফোর্সদের ঘটনা স্থলে পাওয়া যায়। কিছু সময় পরে ঘটনা স্থলে উপস্থিত হন আহত যুবক হাসানের বাবা লোকমান হোসেন। সাথে ছিলেন আহতের সৎ মা সাগরিকা খাতুন। আহতের বাবা থানা পুলিশের সামনেই বলছিলেন সন্ত্রাসী রাজন ও জনি তার ছেলে হত্যা হুমকি দিয়ে আসছিলো। তারাই হাসানকে প্রথম গুলি করে পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে।
গুলি বিদ্ধ হাসানের বাবা লোকমান হোসেন থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সামনে অভিযোগ করেন, ঘটনার রাতে তার ছেলে বাজার থেকে বাড়ি ফির ছিল। আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা তার ছেলের মোটর সাইকেলের গতিরোধ করে। সাথে সাথে সন্ত্রাসীরা দুই রাউন্ড আগ্নে অস্ত্রের গুলি চালায়। তার ছেলে হাসান গুলিবিদ্ধ হয়। পরে তার উপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। গ্রামবাসী এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা ঘটনা স্থলের পশ্চিমের মাঠে নেমে যায়।
তিনি আরও জানান, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে তার জমি থেকে এলাকার এক শীর্ষ সন্ত্রাসী ও বাহিনী প্রধানের দেহরক্ষি জনি’র বাবা জাহিদকে জমি থেকে ঘাস কাটাতে বাধ দেয় হাসান। এ নিয়ে দুই জনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এ ঘটনায় দুই পক্ষই থানায় অভিযোগ করে। থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিজে তদন্ত করে বিচার করবেন বলে জানায়। এর পর থেকে সন্ত্রাসী জনি ও তার মদতদাতারা হাসানকে হত্যার হুমকী দিয়ে আছিল। তিনি ছেলের উপর হামলাকারীদের বিচারের দাবি করেন। একই সাথে তিনি মামলা করবেন বলেও জানান।
এ ব্যাপারে কথিত সন্ত্রাসী বাহিনী প্রধানের দেহরক্ষি জনি’র পরিবারের সাথে কথা বলার জন্য তাদের বাড়িতে যাওয়া হয়। কিন্তু বাড়িতে কাউকে পাওয়া যায়নি।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মঈনুল ইসলাম আগের ঘটনায় থানায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আগের অভিযোগের কথা স্বীকার করেন। তবে দুই পক্ষই নাকি অভিযোগ ফেরত নিয়েছিলো বলেও দাবি করেন তিনি।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরও স্বীকার করেন, সন্ত্রাসী বাহীনি প্রধান রাজন ও তার দেহরক্ষি জনির বিরুদ্ধে এক সংখ্যালঘু পরিবারের কাছে চাঁদা দাবি ও দোকান ঘর দখল করে নেওয়ার ঘটনায় মামলা আছে। অন্য একটি সন্ত্রাসী ঘটনায় জনির বাবা জাহিদকে আটক করা হয়েছিল।