
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন আর স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার দা কুমড়ো সম্পর্ক আরও তীব্রতর। কেউ যেনো কাউকে চাড়তেই চাইছেন না। এই সুবাদে দক্ষিণ সিটির নাগরিকের নাভিশ্বাস। চলছে টাকা আন্দোলন, সেই সাথে চলমান যারপরনাই ভোগান্তি। সব ধরণের সেবা একেবারেই বন্ধপ্রায়।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদ নিশ্চিত করে ইশরাক হোসেনের কর্মসূচি শুরু হলে, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে, “বিএনপির এক নেতার ইন্ধনে ইশরাক আন্দোলন চালাচ্ছেন” এবং দাবি ওঠে যে ইশরাক প্রশাসনিক পদ থেকে প্ররোচিত ও অর্থ-সাপোর্ট পাচ্ছেন—যা ঢাকা ভোটারদের সম্মানহানি করছে ।উপদেষ্টার এ কথায় ইশরাকের পাল্টা বক্তব্যও ছিল বেশ উত্তেজনায় ভরপুর। ২৫ জুন জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ইশরাক বলেন, আসিফের এমন অভিযোগ ঢাকার সাধারণ মানুষ ও আন্দোলনকারীদের “পশুর মর্যাদায়” পৌঁছে দিয়েছে। তার দাবি, আসিফের উচিত জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়া। তিনি আরও বলেছিলেন, আসিফ প্রমাণ না দিলে রাষ্ট্রের প্রতি অনাস্থা ছড়াবে । উভয়ের এমন বিস্ফোরক মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে উভয় শিবিরে।
ইশরাক আসিফকে “দায়িত্বশীল” ভূমিকা নিয়ে আন্দোলন সম্মানজনক অবস্থানে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত না হয়। পাশাপাশি তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন কোনো কর্মচারীর বিরুদ্ধে বৈপরীত্যমূলক পদক্ষেপ নিলে আন্দোলন নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করবে—রাস্তায় ছড়িয়ে পড়বে । তার আগে ইশরাক আসিফের পদত্যাগ দাবি করেছেন। বলেছেন তিনি তাঁর “নৈতিক অধিকার” হারিয়েছেন এবং “শপথ লঙ্ঘন” করেছেন ।
উপদেষ্টা আসিফও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কড়া ভাষায়। আসিফ পাল্টা সাফাইয়ে বলেছেন, ইশরাকের কর্মসূচি “আইনের পরিপন্থী, এক প্রকার ‘ক্রিমিনাল অফেন্স। এবং তিনি শপথ গ্রহন না করেও প্রশাসনে হস্তক্ষেপ করছেন। এছাড়া তিনি ইশরাকের সম্ভাব্য “ভাঙচুর ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা” নিতে হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন । সরকারের উর্ধ্বতন পর্যায়ে এই বিষয়গুলি আলোচনাধীন আছে—তিনি জানিয়েছেন ।
এদিকে সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে ইশরাকের সমর্থকরা নগর ভবন ঘিরে অবস্থান, তালা ঝুলিয়ে সেবা বন্ধ রাখে; আসিফ প্রশাসনের ভূমিকা পালন করে। সাংবাদিক সম্মেলন ও হুঁশিয়ারি ইশরাক সংবাদ সম্মেলনে ক্ষমা দাবি ও দ্রুত প্রতিষ্ঠিত হুমকি উচ্চারণ করেছেন; আসিফ বলছেন, শীর্ষ নেতাদের স্তরে আলোচনা চলছে ।
আসিফের মন্তব্য: উপদেষ্টা হিসেবে তিনি ইশরাকের আন্দোলনকে “বিএনপি নেতাদের ইন্ধনে” হওয়া দাবি করেন, যা ইশরাক ও ভোটারদের মূল্যবোধকে ধ্বংস করেছে। অপরদিকে ইশরাকের দাবি, আসিফ যা বলছেন তা জনগণের প্রতি অসম্মান, তাই তার উচিত জনগণের দোহাই দিয়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করা। বিদ্যমান নির্বাচনী ও আইনি সমাধান পদ্ধতির বাইরে সংঘর্ষ এবং প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ—পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ করে তুলছে। এই দ্বন্দ্ব প্রশাসনের স্বাধিকার ও ভোটাধিকার মঞ্চে সরাসরি সংঘাতের রূপ ধারণ করেছে।
রাজনীতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইশরাকের কর্মসূচি রাস্তায় আকার ধারণ করে রাজনীতির গতি পরিবর্তন করতে পারে। সরকারের উচিত—নির্বিঘ্ন শপথ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা, দ্বন্দ্ব নিরসনে মধ্যস্থতা করা, যাতে স্থানীয় সরকার উদ্দীপনা ও জনস্বার্থের মধ্যে ভারসাম্য সৃষ্টি হয়।
বিশ্লেষকরা এও বলছেন যে, উপদেষ্টা আসিফ এবং বিএনপি নেতা ইশরাকের দ্বন্দ্ব এখন রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দুই প্রান্তে এসে ঠেকেছে—এতে সাধারণ নাগরিক, প্রশাসনিক কর্মচারী ও রাজনৈতিক আন্দোলনরা জড়িত। দ্বন্দ্ব হঠাৎই রূপান্তরিত হতে পারে আর এক জটিল রাজনৈতিক সংকটে। পরিস্থিতি পত্রিকায় ধারাবাহিক একটানা প্রতিবেদন দিয়ে তুলে ধরার মাধ্যমে, জনগণের সামনে এই দ্বন্দ্বের গুরুত্ব ও প্রকৃতি তুলে ধরার সুযোগ আছে।