
এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ) এর একটি চৌকস দল নিজস্ব নজরদারীর ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে গাজীপুর মেট্রোপলিটনস্থ কাশিমপুর থানাধীন লতিফপুর এলাকা হতে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’ এর ০১ (এক) সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত আসামীর নাম: মো: রুহুল আমিন (১৯), পিতা- মোরশেদ আলী, গ্রাম- সরকারপাড়া, থানা- পার্বতীপুর, জেলা- দিনাজপুর। বর্তমানে সে স্থানীয় একটি গার্মেন্টস কারখানায় এমসি অপারেটর হিসেবে কর্মরত ছিল। গ্রেফতারকালে তার নিকট থেকে ০১ (এক) টি এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন এবং ০২ (দুই) টি সিমকার্ড জব্দ করা হয়।
পরবতীর্তে, আসামী মোঃ রুহুল আমিন এর দেওয়া তথ্যমতে, এটিইউ এর অপর একটি আভিযানিক দল ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি. দুপুর ০২.৩০ ঘটিকার সময় যশোর জেলার মনিরামপুর ধানাধীন ০১ নং রোহিতা ইউনিয়নের গাংগুলিয়া এলাকা হতে ‘আনসার আল ইসলাম’ এর আরো ০১ (এক) জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃত আসামীর নাম: মো: রিয়াজুল ইসলাম (২৩), পিতা- মোঃ রাজু আহম্মেদ, গ্রাম- গাংগুরিয়া, থানা- মনিরামপুর, জেলা- যশোর। বর্তমানে সে যশোর সিটি কলেজের দর্শন বিভাগে অনার্সে অধ্যয়নরত। গ্রেফতারকালে তার নিকট থেকে ০১ (এক) টি এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন এবং ০২ (দুই) টি সিমকার্ড ও ০১ (এক) টি মেমোরিকার্ড জব্দ করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত মো: রুহুল আমিন ও মো: রিয়াজুল ইসলাম তামিম আল আদনানী, আলী হাসান উসামা, মাহমুদুল হাসান গুনবী ও হারুন ইজহারদের বক্তব্যে অনুপ্রাণিত হয়ে ‘আনসার আল ইসলাম’ এর সদস্য হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীরা দীর্ঘ দিন ধরে অনলাইন ও সাইবার স্পেস ব্যবহার করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’ এর প্রচারণাসহ গণতান্ত্রিক সরকার উৎখাত ও তথাকথিত খেলাফত প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। গ্রেফতারকৃতরা বিভিন্ন এনক্রিপ্টেড মোবাইল অ্যাপস ব্যবহার করে সংগঠনের অন্যান্য সদস্যদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করত। তারা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’ এর অন্যান্য সদস্যদের সহায়তায় অনলাইন ও সাইবার স্পেস ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের মধ্যে উগ্রবাদী মতাদর্শ প্রচার ও আতংক সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের আইনশৃংঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং নাশকতার জন্য পরিকল্পনা, প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি গ্রহণ করে আসছিল।
গ্রেফতারকৃত মো: রুহুল আমিন ও মো: রিয়াজুল ইসলামের বিরুদ্ধে জিএমপি’র কাশিমপুর থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে নিয়মিত মামলা রজু করা হয়েছে (কাশিমপুর থানার মামলা নং- ০৮, তাং- ০৬/১২/২০২৩ খ্রি. ধারা- সন্ত্রাস বিরোধী আইন ২০০৯ এর ৮/৯(৩)/১০/১৩)। এটিইউ’র অপর একটি আভিযানিক দল হাতিরঝিল থানার অধিযাচন পত্রের ভিত্তিতে নিজস্ব নজরদারি ও গোয়েন্দা তথ্যের সহায়তায় ০৬ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রি. বিকাল ১৭.৩০ ঘটিকায় অভিযান পরিচালনা করে ডিএমপির যাত্রাবাড়ী মডেল থানাধীন পোস্তগোলা এলাকা হতে সন্ত্রাস বিরোধী আইন, বিষ্ফোরক দ্রব্য আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ সর্বমোট ০৯ টি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত ০১ (এক) জন পলাতক আসামীকে গ্রেফতার করেছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীর নাম- আরিফ হোসাইন @ মো: আরিফুল ইসলাম রাহাত (৩১), পিতা- মো: ফয়েজ আলী, গ্রাম- আভঙ্গী থানা- বিয়ানীবাজার, জেলা- সিলেট। গ্রেফতারকৃত আরিফ হোসাইন @ মো: আরিফুল ইসলাম রাহাত ২০২১ সালে তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা থেকে কামিল পাশ করে। সেখানে পড়াকালীন সে ঢাকা মহানগর পূর্ব শাখা ছাত্র শিবিরের সভাপতি ছিল। ২০২২ সালে সে তামিরুল মিল্লাত মাদরাসা, যাত্রাবাড়ী শাখার ছাত্র শিবিরের সভাপতি ও পরবতীর্তে ২০২৩ সাল থেকে বাংলাদেশ ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিল। গ্রেফতারকৃত আরিফ হোসাইন @ মো: আরিফুল ইসলাম রাহাত এইচএসসি পাশকৃত ছাত্র-ছাত্রীদের শিবিরের কমীর্ হিসেবে যোগদানে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে ‘ব্রিজিং প্রজেক্ট’ এর মূল সমন্বয়কারী ছিল। ‘ব্রিজিং প্রজেক্ট’ এর আওতায় এলাকাভিত্তিক এইচএসসি পাশকরা ছাত্র-ছাত্রীদের তালিকা তৈরি, সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন এবং ছাত্র-ছাত্রী সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হত। পরবর্তীতে, এই সকল ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে যারা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বা কলেজে ভর্তির সুযোগ পেত, তাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা এবং ভর্তিতে সহায়তা করে ঐ ছাত্র-ছাত্রীদেরকে শিবিরের কার্যক্রমের সাথে যুক্ত করত।
গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।