শনিবার,

২০ এপ্রিল ২০২৪

|

বৈশাখ ৬ ১৪৩১

XFilesBd

শিরোনাম

বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী প্রাণি ও মৎস্যসম্পদ উন্নয়নে বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর বিএনপি নেতারা সন্ত্রাসীদের সুরক্ষা দেওয়ার অপচেষ্টা করছে : ওবায়দুল

টিকা বিতরণে এখনও  উন্মুক্ত হয়নি মোবাাইল এ্যাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০৭:৫৬, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১

আপডেট: ০৭:৫৬, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১

টিকা বিতরণে এখনও  উন্মুক্ত হয়নি মোবাাইল এ্যাপ

ছবি: সংগৃহিত

দেশব্যাপী নভেল করোনাভাইরাসের টিকা প্রয়োগের কার্যক্রম শুরু করার জন্য প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে হলেও তৃণমূলের প্রচারণায় কম পদক্ষেপ দেখা গেছে। এখনো প্রতি মুহূর্তে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন নির্দেশনা। এদিকে সেলফোন অ্যাপ উন্মুক্ত না হওয়ায় ওয়েবসাইটই টিকাপ্রত্যাশীদের একমাত্র ভরসা। অনলাইন নিবন্ধন ছাড়া টিকা দেয়া হবে না বলা হলেও কিছু ক্ষেত্রে এখন অফলাইনে নিবন্ধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। টিকা কার্যক্রমের জন্য তৃণমূলে প্রচারণা চালানোর কথা আগে থেকে বলে আসছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

গত ২৭ জানুয়ারি দেশে পরীক্ষামূলক টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেদিন বিকালে টিকাপ্রত্যাশীদের নিবন্ধনের জন্য ‘সুরক্ষা’ নামের ওয়েবসাইট চালু করা হয়। একই নামে সেলফোন অ্যাপ চালু করার কথা থাকলেও তা উন্মুক্ত করতে পারেনি সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। পরীক্ষামূলক টিকা প্রয়োগ কার্যক্রমের দুদিন রাজধানীর পাঁচ হাসপাতালে ৫৬৭ জন টিকা গ্রহণ করে। তাদের মধ্যে গুরুতর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা না যাওয়ায় নির্ধারিত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে সারা দেশে টিকা কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে সরকার।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, টিকাপ্রত্যাশীদের জন্য অনলাইন নিবন্ধন চালু করা হলেও সেলফোন অ্যাপ গুগলে তা উন্মুক্ত হয়নি। গত ২৭ জানুয়ারি বিকাল থেকে চালু হওয়া ‘সুরক্ষা’ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গতকাল বিকাল পর্যন্ত ৭৭ হাজার টিকাপ্রত্যাশী নিবন্ধন করেছে। কারিগরি ত্রুটির কারণে নিবন্ধনে কিছুটা ধীরগতি হয়েছে। অনলাইন নিবন্ধনে মানুষের আগ্রহ কম থাকায় জেলায় জেলায় প্রচারণা চালানো হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে মাইকিং করে এবং লিফলেট বিতরণ করে প্রচারণা চালানো হচ্ছে বলে দাবি করছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তারা।

নিবন্ধন কার্যক্রম চলমান প্রক্রিয়া উল্লেখ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মিডিয়া সেলের সভাপতি ও অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘জেলাসমূহে নির্ধারিত ডোজের টিকা এরই মধ্যে পাঠানো হয়েছে। আমাদের নির্দেশনাও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।’

তবে বেশ কয়েকটি জেলার মতো পিরোজপুর ও রংপুরে গতকাল পর্যন্ত কোনো প্রচারণা শুরু হয়নি। পিরোজপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. হাসনাত ইউসুফ জাকী জানান, জেলার জন্য নির্ধারিত ৩৬ হাজার ডোজ টিকা বুঝে পেয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোনো প্রকার প্রচার-প্রচারণা শুরু করা হয়নি। টিকাপ্রত্যাশীদের চাপ না থাকলে তখনই প্রচারণায় যাবেন জেলার প্রধান এ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।

উত্তরাঞ্চলের রংপুর জেলায় নির্ধারিত ২ লাখ ৪ হাজার ডোজ টিকা পাঠানো হয়েছে। তবে অফলাইনে নিবন্ধনের জন্য এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা আসেনি বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. হিরম্ব কুমার রায়।

জানা যায়, নিবন্ধন কার্যক্রম অনলাইনের পাশাপাশি অফলাইনেও করা হবে। ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য কেন্দ্রে হাতে লিখে নিবন্ধন করা হবে। এজন্য কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা হাসপাতালে কর্মরত স্বাস্থ্যসেবা সহকারী কর্মীদের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। ১ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বিভাগীয় পরিচালক, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালক, সিভিল সার্জন বা তত্ত্বাবধায়ক এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রত্যেক টিকা কেন্দ্রে একটি ল্যাপটপ ও ইন্টারনেট সংযোগসহ একটি নিবন্ধন বুথ প্রস্তুত রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। তবে অফলাইনে নিবন্ধন করা হলেও সব তথ্যই অনলাইনে প্রবেশ করানো হবে।

টিকা ব্যবস্থাপনা ও বিতরণ কমিটির সদস্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর (এমএনসি অ্যান্ড এএইচ) ডা. সামসুল হক জানান, এখন ৫৫ বছরের নিচের কেউ টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন না। তবে ৫৫ বছরের নিচে সম্মুখযোদ্ধাদের তথ্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলে আইসিটি মন্ত্রণালয় তাদের রেজিস্ট্রেশন আগেই সম্পন্ন করবে। প্রথম পর্যায়ে রাজধানীতে ৪৯টি কেন্দ্রে টিকা দেয়া হবে। ঢাকার বাইরে সারা দেশে ৬১৩টি কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। কেন্দ্রের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। এসব কেন্দ্রে ৬ হাজার ৯৯০টি দল কাজ করবে। প্রতিদিন সারা দেশে ২ লাখ করে প্রথম মাসেই ৬০ লাখ টিকা প্রয়োগ করা হবে।

টিকার প্রচারণার জন্য জেলার তথ্য কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। তিনি বলেন, ‘আমরা শুরুতে অনলাইন ছাড়া নিবন্ধন করতে চাইনি। কিন্তু এখন কিছু নিবন্ধন অফলাইনে করা হবে। তবে এসব তথ্য অনলাইনে প্রবেশ করানো হবে। এজন্য কাজও শুরু হয়েছে। প্রতিনিয়তই জেলাগুলোয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। জেলা থেকে পাঠানো তালিকা অনুযায়ী হিসাব করে টিকার ডোজ পাঠানো হয়েছে। কিছু কমবেশি হতে পারে।’