মঙ্গলবার,

০৩ জুন ২০২৫

|

জ্যৈষ্ঠ ১৯ ১৪৩২

XFilesBd

ব্রেকিং

২০২৫-২৬ অর্থবছরের ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছেন অর্থ-উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। মোট বাজেট -৭,৯০,০০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা-৫,৬৪,০০০ কোটি টাকা বাজেট ঘাটতি -২,২৬,০০০ কোটি টাকা (জিডিপির ৩.৬%) জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা-৫

স্মৃতির জগতে শরফুজ্জামান মুকুল ভাই

আকবর হায়দার কিরন

প্রকাশিত: ০০:১৮, ২ জুন ২০২৫

আপডেট: ২১:৪৬, ২ জুন ২০২৫

স্মৃতির জগতে শরফুজ্জামান মুকুল ভাই

আশির দশকের সেই উজ্জ্বল দিনগুলোতে আমার বেতার জীবনের সূচনা হয়েছিলো জনপ্রিয় রেডিও ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান উত্তরণ-এ বিশেষ সাক্ষাৎকার দিয়ে। তখন আমি রেডিও লিসনার্স ক্লাব ফেডারেশনের সভাপতি, আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন সহকারী আঞ্চলিক পরিচালক, কবি মুস্তফা আনোয়ার, আর সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন জনপ্রিয় বেতার ব্যক্তিত্ব শফি কামাল। শাহবাগের বেতার ভবনের দোতলার সেই কক্ষে, উত্তরণ অনুষ্ঠানের সময় যেন এক তারকাখচিত মিলনমেলা হতো। আলফাজ তরফদার ছিলেন অনুষ্ঠানের প্রযোজক, গ্রন্থনা করতেন আনিস আহমেদ ও মাহমুদুল হাসান কামাল।

সেই উত্তরণ-পর্ব থেকেই আমার পরিচয় হয় শ্রদ্ধেয় শরফুজ্জামান মুকুল ভাইয়ের সঙ্গে। খুব দ্রুতই তা আন্তরিকতায় রূপ নেয়। প্রবাসজীবনের দীর্ঘ পর্ব—নিউ ইয়র্কের ব্যস্ততা, নিঃসঙ্গতা, সাংস্কৃতিক আবেশ—সবকিছুর মধ্যেও আমাদের বন্ধন কখনো ছিন্ন হয়নি। মাঝে কিছু যোগাযোগ-বিচ্ছিন্নতা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু সেটা ছিল প্রযুক্তিগত—ফোন নম্বর পরিবর্তন, ফেসবুক পাসওয়ার্ড হারানো ইত্যাদি। সম্পর্কের উষ্ণতা বরাবর অটুট থেকেছে।

মুকুল ভাই ছিলেন একাগ্র ও স্বতঃস্ফূর্ত সাংস্কৃতিক কর্মী। শফি কামাল ভাইয়ের প্রয়াণে আমি যে স্মৃতিচারণ লিখেছিলাম, সেটি তিনি তাঁর টাইমলাইনে একাধিকবার শেয়ার করেছিলেন—স্মৃতির প্রতি তাঁর শ্রদ্ধাবোধ ছিল গভীর। শিল্পী জাহেদ শরীফ তাঁর আবৃত্তির রেকর্ডিং বহু বছর আগে প্রকাশ করেছেন। তাঁর অসাধারণ কণ্ঠ আমি শুনেছি সেই চার যুগ আগে থেকেই—বেতারের দিনগুলোর স্মৃতি যেন কান পাতলেই ফিরে আসে।

উত্তরণ সূত্রেই কাজী আরিফ ভাইয়ের সাথেও পরিচয়, যার শেষ অধ্যায়ও নিউ ইয়র্কেই রচিত হয়েছিল। আর মুকুল ভাইকে তো আমরা পেয়েছি সবখানে—জাতিসংঘ মিশন, বাংলাদেশ কনস্যুলেট, উদীচী, বাংলা টিভির স্টুডিও, বৈশাখী উৎসব—নানান আয়োজনে। তাঁর প্রথম স্ত্রী বেবী ছিলেন এক বিশিষ্ট মঞ্চনটী, যদিও বহু বছর তাঁরা আলাদা ছিলেন।

গতরাতে বন্ধু মনির (সিভিএস-এর স্টোর ম্যানেজার ও অভিনেত্রী বেরীর বড়কর্তা) যখন জানালেন, “মুকুল ভাই আর নেই”—তখন যেন শব্দ থেমে গেল। স্মৃতির জগতে চলে গেলেন তিনি, কিন্তু রেখে গেলেন এক গভীর শূন্যতা।

মুকুল ভাই, আপনি চিরস্মরণীয়।
আপনার কণ্ঠ, আপনার উষ্ণতা, আপনার উপস্থিতি—সবই আমাদের হৃদয়ের গভীরে গেঁথে থাকবে।