
অখিল পোদ্দারের দুটি কবিতা
মেঘবৃষ্টির আলো
সন্ধ্যা নামলেই মেঘবাজি করে আকাশ
অথচ
বৃষ্টি নামাতে অক্ষম ৩৩ মিলিমিটার
ভেজা জোছনা কতোদিন নরম হয় না নিপাটজলে
গার্হস্থ্যগণ প্রায়শই কেঁদে বলে —
ক্ষেতের বীজ নষ্ট হলো খামারে ;
বিকেল হতেই বাসনার ঝড়ে আকাশ
কালো কালচে করোনার সব মুখোশ
ঝঞ্ঝাঝড়ে রায়বাহাদুর বাতাস
মৃগীরোগীর প্যান্ট ফিতাতে ফ্যাকাশ —
জড়িয়ে গেছে জিপারের তলে
জলে —
অথচ
বৃষ্টি হবে বলে কথা দিয়েছিল ইন্দ্র;
রাতের বেলা হুঙ্কার দিল মেঘ
আজ ভেজাবে ক্ষেত খামাতের ক্ষত
নষ্ট বীজে ভাঁড়ার পাতিল হাঁড়ি
পাণ্ডু রোগে ইন্দ্র ছেড়েছে বাড়ি —
বৃষ্টি হবে শেষ গোসলের আগে
স্নানের পরে যেমন গোস্বা করে
মেঘের দলে মেঘের রেশারেষি
তেমনি —
আজ আকাশে বৃষ্টিবাতাস ভারি
নষ্ট বীজের বাষ্প ভেঙে হাঁড়ি।
আকাশদলে আকাশনীলা পরী
পেটিকোটের ছায়াল লুকোয় জরি
জোছনারাতে ঘুঙুর পরে জল
ঝিমরিমিয়ে নামে মেঘের ঢল।
আজ মাতাবে রাতের যতো ক্ষেত
বাগানবাড়ি নিঁদশিয়ানে রেশ
বীজের বেশে জলনিপাটের খেলা
অংকবাবুর গুণতে গেল বেলা।
পেটিকোটের সিন্দুকে লুকানো নীলাকাশ
এ দেশের ব্যাংকবাবাজিরা —
পরিত্যক্ত পেটিকোট কেটেকুটে
বানিয়েছে ক্যাশের সিন্দুক।
সকালবিকেল সন্ধ্যে গড়িয়ে
ঝালরের ভাঁজে পকেট খুঁজতে
লাইনের পর লাইন।
অথচ
ব্যাংক মানে নিজের টাকা পরের সিন্দুকে
বাজার বলতে নিজের খাবার
কষ্ট করে কিনতে হয় নিজেরই টাকায়।
ক্যাশবাবুর চারপাশ ঘিরে থাকা মেয়েরা
হাতের মিহিনে
এবং
চাইনিজ মেশিনে
গুণে নেয় পরের টাকা সযত্ন আদরে।
লম্বা বাজার ছেড়ে ব্যাংকের বুথ এখন
গোলা ও সদরে।
বাড়ির কাছে, ও বাসার পাশে দোতলায় —
টিকটিকি তক্ষক তেলাপোকাদের অদ্ভুত কস্টিউম
টের পাবার আগেই
ক্যাশবাক্সে চলে যায় মক্কেলের দান
যেনো ইয়ারউদ্দি খলিফার মাজার
কিংবা
ইয়াতিমখানার লালবাকসোর ছিদ্রে
যেমনি করে ফেলে আসে ইতিউতি করে
ভাবিত পরকাল, সিন্দুক ও নিন্দুকে
ফিতাহীন পেটিকোট যেমন
ভালোবাসে আঁধার, ভল্টের ভেতর কেনো ভল্ট
নিজের টাকা পরের বাকসে
পকেটের পয়সা খরচা করে —
বরং বোতামের বদলে জিপার লাগালে
পেটিকোটের ঘাঘড়ায় ক্যাশ গজাবে;