বৃহস্পতিবার,

৩১ জুলাই ২০২৫

|

শ্রাবণ ১৫ ১৪৩২

XFilesBd

ব্রেকিং

২০২৫-২৬ অর্থবছরের ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছেন অর্থ-উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। মোট বাজেট -৭,৯০,০০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা-৫,৬৪,০০০ কোটি টাকা বাজেট ঘাটতি -২,২৬,০০০ কোটি টাকা (জিডিপির ৩.৬%) জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা-৫

অখিল পোদ্দারের ধারাবাহিক কবিতা অধুনা চর্যাপদ

ড. অখিল পোদ্দারের ১০টি কবিতা-অধুনা চর্যাপদ

ড. অখিল পোদ্দার (Dr. Akhil Podder)

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ২৮ জুলাই ২০২৫

ড. অখিল পোদ্দারের ১০টি কবিতা-অধুনা চর্যাপদ

 . অখিল পোদ্দারের ১০ টি কবিতা

(দীর্ঘ  কবিতা-অধুনা চর্যাপদ)

  ( চর্যাপদ-২১ )

 

দক্ষ রাজার শাসন ভারি

চাল জোটে না চুলোয় হাঁড়ি

সালাম ডাকাত গরুর নৌকো

পদ্মা গড়াই চষে বেড়ায়

তারও আছে সমাজ-ধর্ম

চুন খেলে সে পানের খিলি

দেয় যে মুখে হা-ওয়ালাদের!

চোর মানে না ডাকাত নেতা

এ এক আজব সময় এলো

দক্ষ রাজা চতুর ভারি

নিজের বোঝা নিজেই তোলো।

পদ্মা গড়াই বুঝে-শুনে

নৌকো চালায় ডাকাত সালাম

পাবনা পাড়ের গোয়ালন্দে

স্রোত না বুঝে সাঁই কুপোকাত।

চতুর রাজা চালাক উজির

এমন কোথাও নেই তো নজির

ঢেউ বোঝেনা, দাঁড় জানে না

সে আর কতো বৃহৎ মাঝি?

এইতো আছি, পাটের গুছি

বাঁধি-ধরি পাড় কিনারে

বৃদ্ধ-যুবা চর্যাপদে

বিপদ কাটায় পদে-পদে

দেহ-কামে ফুলের সাজি ;

 

     ( চর্যাপদ-২২ )

 

দেহের চারপাশে মসৃণ ঘৃণার ল্যান্ডফিল

ওপাশে যাত্রাবাড়ি, এপারে গাবতলী

বিকট দুর্গন্ধ আন্ধার দেখায়

বদলে যাওয়া জগডুমুর

লাপাত্তা শিল্পিতজন

বিবেক না জাগলে বলাৎকার হতে হয় পুরুষিতজনে ;

 

মোক্ষ রাজার শাসন ভারি

কাওরানবাজারে আড়তদারি

এতো সোজা নয় রে ডাকাত

বাড়ির কাছে পদ্মা গড়াই

পাঁকে পড়লে বীর কুপোকাত

নিজের সাথে নিজের নাড়াই ;

    

( চর্যাপদ-২৩ )

 

কালিদাস হারিয়েছে মেঘের প্রথম কদম ফুল

আষাঢ়স্য প্রথম দিবসে

আকাশ ভেদ করে নি:সীম ক্ষেপনাস্ত্র

দখল নিয়েছে সীমান্তের ওপার

মেঘদল হারিয়েছে রোদেলা বৃষ্টির ফোটা

কালিদাস বুনে চলে বিস্তৃত জালের জল

স্নানঘর চলে আসে বধূদের বয়োসন্ধিকালে

 উবে যায় ঝরা শিউলি, চৈত্রের ঘুর্ণিতে বাঁশপাতা

মেঘ হারিয়েছে মেঘের জ্যামিতি

আষাঢ়ে হ্রাস এ্যাটাক উড়োপ্লেন

অক্ষরেখায় রাতদুপুরে কে যেনো বাঁশি বাজায়

আকাশ আলো করে জ্বলে ওঠে শব্দের স্নাইপার

নিজ চোখে শয়তান দ্যাখো

জানো বাতাসের গতিবেগ !

 

( চর্যাপদ-২৪ )

 

আহা, বৃষ্টি শুকিয়ে গেলো ভরা-ভাদরে

পুত্রশ্লোকে অন্ধ ধৃতরাষ্ট্র

হস্তিণাপুরের বৃদ্ধরা বাড়িতে নেই

মরদেরা গেছে নিমকির তেলে নিজেকে পোড়াতে

কন্যাদলে পিতা, মাতৃশোকে ভরপুর সারি সারি সন্তান

মোষের জোয়ালের মতো ক্ষেপনাস্ত্র তেড়ে আসে

যে নগরে অসহায় একদঙ্গল শিশু ;

এ-ও কি সম্ভব বাল্মিকী মুনিবর

নবরূপে লেখা হোক রামায়নের শক্তিকাণ্ড

নতুন করে পাথর হই আমরা শোকে-বিস্ময়ে

চালাও কামান-

মেঘ ভেদ করে আসে মেঘের গর্জন

ম্লেচ্ছ কালিদাস হারিয়েছে অম্লান পৃথিবী

বস্ত্রহীনা পাখি, অন্ন বিনা জল

কিংবা, সবাই সব ছেড়েছে

যুদ্ধের আগে থাকে মরণ

বোতামে বিশুদ্ধ হয় পেতলের স্টেনগান।

 

( চর্যাপদ-২৫ )

 

ক’দিন আগেও আধখানা মেঘ হারিয়ে গেলো

পুরোদস্তর আকাশ থেকে

আঁধারে-আহারে উধাও সে মানচিত্র

পুরো ব্রহ্মাণ্ড দৌড়ে এলো

ঋতুমতি মেঘনার কাছে-।

ঋণের অর্থ জানতে চাইলেই

সামনে এসে গেছে জলের বন্দোবস্ত

নন্দিত গোমতী যে দুঃখে মিশেছিল ডাকাতিয়া মেঘনায়

কেন্দ্রে হিসেবে শুধু হাতিরঝিলের।

যেদেশে ভাতের চেয়ে অস্ত্রের চাহিদা বেশি

সে নৌকোর পাল ছুঁয়ে যাবে নির্জিব গাছের ডাল

তার চেয়ে বরং উবু হয়ে চলো

নুইয়ে পড়া ব্রিজগুলো উঁচু হবে শিগগিরই

ক্ষ্যাপা বাতাসের তোড়ে। 

 

( চর্যাপদ-২৬ )

 

একমাত্র প্রাইভেট জব

শহরকে দিয়েছে অনেক

তার চেয়ে কেড়ে নিয়েছে আরও বেশি ঢের  

রোদ্র তপ্ত দুপুরে মুকুলের ঘ্রাণ, দোলকলমির ফুলে পড়ন্ত নিঃশ্বাস

ফড়িং যেমন উপযাচক

উড়ে পুড়ে পাখনা ঢাকে ভেন্ডির পুষ্পিত পাতায়

অবশেষে -

নিজের আঠায় আটকায় নিজের পা ;

 

( চর্যাপদ-২৭ )

 

 

জানি -

দেবতারা একদিন পৃথিবীতে এসে

হেঁটে গিয়েছিল দূরদেশ

সেই থেকে -

মানুষেরা হয়ে গেলো জনতার গণদেবতা ;

যদি তাই হয় -

এ পৃথিবী কেনো হয়ে ওঠেনি নীড় ফেরা পাখির??

(পুকুরপাড়, কলাবাগান, ঢাকা ২৩ জুলাই ২০২৫)

( চর্যাপদ-২৮ )

 

ভাঙন -

নদী চলে আসে ঘরে ঘরে

কখনো সখনো স্রোত আর সাপ

দূরপথ বেঁকে বেঁকে বাসা বাঁধে মনে

আমাকে ভাঙবে বলেই

এসেছে মূলতঃ

আরও আসবে ওদের সহচর :

 

আমাকে ভাঙবে বলেই

তীর ভেঙেছে ঘাসফুল

ওপার হতে এপারে এসেছে শিকস্তির মানচিত্র

জানি -

অথৈ বালুকা স্নিগ্ধতা ছড়ায় রাশি রাশি

তবে কি জলের নাম দুঃখ-সুধা ?

 

এখানে ওখানে নদী গেছে নদীর মতোই

স্রোতধারায় বদলে যায়  

নিবিড় ভাঙন

নদী আজ ঘরে ঘরে দুঃখের বিকশিত নাম :

 (আজিজ সুপার মার্কেট, শাহবাগ, ঢাকা- ২০ জুন ২০২৫)

 

( চর্যাপদ-২৮ )

 

রাজার গাধা হলেও তুমি কিন্তু গাধাই

তোমারও -

অজস্র রক্ত গুণে হয় রতি,

সমসংখ্যক জমাটবদ্ধতে যায় মতি

মতিতে মুক্তি আসে বিষের ভাণ্ড হয় খালি

বাতাস বোঝে বিশুদ্ধ প্রশ্বাস

বোকা তাই চুপ থাকতে পারে না

তোষামোদে বিগলিত হয়

না হয় ইনসান না হায়ান

রাজার গাধা হলেই সে মানুষ হয় না

যদি না যায় মানুষের কাছে :

(পুকুরপাড়, কলাবাগান, ঢাকা ২৮ জুলাই ২০২৫)

( চর্যাপদ-২৯ )

 

মধ্যবিলে পদ্মপাতায় জড়িয়ে থাকা সর্পাধ্যক্ষ

পিলপিল বৃষ্টিতে সে-ও চায় গহীন দুপুর

জলজ হুইস্কির ঘ্রাণ যেমন আনন্দ ছড়ায়

সুন্দর চিনে নেয় পরিপাট্য সৌন্দর্য ।

 

বিদ্যুতের আলো উতরে সন্ধ্যায় হ্যারিকেন বাতি

নমোনিত্য হয়ে ওঠা কেজির বাটখারা যেমন

চাঁদ ও পিয়ারী-

জোছনার জলে অন্ধকার পায় আবির্ভাব

থৈ বিলে ধ্যাপের সারিবদ্ধ নাল

শতদলে জড়াক শৈবাল ।

 

অনন্ত আকাশ দেখে মধ্যবিল

মাঠের কৃষাণী গোণে পদ্ম

এ দেহ ফসল জমিনে

সারাক্ষণ উড়ে চলে পাখি আবাবিল ।

(পুকুরপাড়, কলাবাগান, ঢাকা  ১৩ জুলাই ২০২৫)

( চর্যাপদ-৩০ )

 

নদী শুয়ে আছে বহুদিন

নিঃসীম আকাশের নিচে

যে ঘুমায় সে দুঃখ বোঝে না

নদী কিংবা মানুষের ।

 

নদ বুঝি অবসন্ন চৈত্র দুপুরে শুধু

আটপৌরে রাত, সিরাসক্ত দিন

পঞ্জিকা পেরিয়ে যায় লোকনাথ আশ্রম

নদী তবু শুয়ে থাকে অলস সন্ধ্যায়

কেনো সে দেয় পাহারা পৃথিবীর গোধুলি বেলা ??   

(পুকুরপাড়, কলাবাগান, ঢাকা ২৮ জুলাই ২০২৫)