রোববার,

১৩ জুলাই ২০২৫

|

আষাঢ় ২৯ ১৪৩২

XFilesBd

ব্রেকিং

২০২৫-২৬ অর্থবছরের ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছেন অর্থ-উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। মোট বাজেট -৭,৯০,০০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা-৫,৬৪,০০০ কোটি টাকা বাজেট ঘাটতি -২,২৬,০০০ কোটি টাকা (জিডিপির ৩.৬%) জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা-৫

ড. অখিল পোদ্দারের ৪ টি কবিতা

ড. অখিল পোদ্দার (Dr. Akhil Podder)

প্রকাশিত: ০৪:৪০, ১৩ জুলাই ২০২৫

আপডেট: ০৪:৪১, ১৩ জুলাই ২০২৫

ড. অখিল পোদ্দারের ৪ টি কবিতা

ড. অখিল পোদ্দারের ৪ টি কবিতা

 

আকাশ নিমিত্ত মাত্র

পাখিটা উড়তে উড়তে আকাশ হয়ে গেলো

বারোমাসি নদীর জল টুপটাপ

ওপাশে ধানখেত, স্নিগ্ধ পরাণ

আধখানা রোদ্দুর-

দুয়ে মিলে পাখির দল এনেছে গোধুলি;

বাতাসে ফসল হানি, চৈতালি মেঘ

সহসা হয়ে গেলো নিরাক দুপুর;

বসন্তপাখি হলে সাঁঝের তারা

এসো নদের চাঁদ, মাতৃআজ্ঞা ভাঙা বুনোহাতির দল

নিমাইয়ের সন্যাস ভালো, জন্মের প্রতিফল

মাঠের শেষে ছিল নীলে ভরা মেঘ

আপনা আপনি চিনে বাতাসের বেগ

পাখিরা উড়ে গেলো আকাশ ওপারে

বসন্তদিন শেষে তারা ভরা রাত

স্নান গড়িয়ে পড়ে বিন্দুতে ঘাস

পাখিটা মিশে গেলো ওপারে আকাশ

মানুষ মানুষ বেহুঁশ রুদ্ধদ্বারে শ্বাস ;

বারোমাসি নদী টুপটাপ জলে

মাছরাঙা কৈ-মাছ

ছায়া দেখে খেলে

আকাশ নিমিত্ত মাত্র

উড়ে অবধি চিল

পাখিটা হয়ে গেলো

কার্পাসডাঙার বিল;

(23 March 2025 Pukurpar Dhaka)

 

নিহত চৈত্রের আনত নীলবাঁশ

সত্যি চলে যাবে দূর দারুচিনি

দেশে দেশে চৈত্র পোড়ায় নিরাক অন্ন

অম্লান ধাতু গলে সূর্যের মিহিন নকশি

এসো পাটের আসন

তোমায় নমি একাকী অসহায়;

যদিও ঝাঁকড়া চুলে গোপাল সন্যাসী

নীল বাঁশ জলে পুতে নিদাঘ মেঘ

তরবারি শুয়ে যায় ধুলায় ধুলায়

দারুচিনি দেশ চেনা মঙ্গল গোঁসাই

পাটের আসন ধরে রুগ্ন শীর্ণ ছাতা;

বুকের কপাট পুঁতে শীর্ণ নীল বাঁশ

অযথা মরচে ধরা রাস্তা নুয়ে ঘাস

সহসা খড়গ হতে পারে রঙিন রূপবান

এসো মেঘ, চৈত্রের বর্ষণ

আশ্বিন স্পর্শ করো কোলজুড়ে কাশ;

(১৭ মার্চ ২০২৫, বরইচারা, খোকসা, কুষ্টিয়া)

 

হিমরাতে রবীন্দ্রনাথ

শীত রাতে হিম হয়ে আসে রবীন্দ্রনাথ

শেয়ালের ডাক অন্ধ করে দেয় আখখেত

ক্রমশ-

উদ্দীপ্ত শহর নেতিয়ে দেখে ধ্বজভঙ্গ জোছনা

ততোক্ষণে দেয়াল ঘুমায়,  কুঠিবাড়ির আমবাগান

যেখানে

শব্দটি আর যায় না শোনা- নয়নাভিরাম

রোদেলা বাটিতে পুঁটি মাছ, ফেরিওয়ালার মটকা

শুধু হিম হয়ে আসে রবীন্দ্রনাথ

ক্লান্ত কবিতাগুলো দেয় পাহারা ঝরণা কলম ও সিংহদ্বার।

উবু গলিটা হাঁক ছাড়লেই প্লাস্টিক ভ্যান

বাদ্য বাজনার বিয়ে বাড়ি

পান গলাতে চুন খসে যায় সুবল বুনোর ধুতি

হিম হয় রবীন্দ্রনাথ, বরফের আচ্ছাদন

চেটে খায় ধুসর দস্তা, লাল জামা ঋতুস্রাব

চা-ওয়ালা, টংঘর

গপ্পসপ্পর মোহনবাগান।

শীত রাতে মিহিন শাসনে ঘুমায় সাঁঝের তারা

শুয়ে থাকে ভক্তি-ভাব নির্মাল্য কাদায়

ধুসর ধুতরা পাতা কবিয়াল চেনে কি?

গান ছাড়া ডাব পড়ে জন্ডিসের কোয়াক।

একরত্তি সময় যায় না ফাঁকা বিষাদ ছাড়া

এই শহর-

সবাইকে ভালো রাখে-

মেনি বিলাই, জগদ্দল পাথর আর রবীন্দ্রনাথকে;  

(২০ জানুয়ারি ২৫, পুকুরপাড়, কলাবাগান)

 

দেশলাই জ্বলে ওঠে কাঠের ঘর্ষণে

আয়নাঘরের সমৃদ্ধ জাগরণ

ছুটে যায় স্মৃতির কাছে

এসো আগুন, দেশলাই জ্বেলে কাঠের ঘর্ষণ খুঁজি।

ঘুণপোকা জাবর কেটে সে এক সন্ধ্যায়

ছুটে গেছে বনেদি পুরুষ

গাছের গুড়ি কিংবা নির্বাক কাঠ

সবাই স্বস্তি চেয়েছিল বাহাদুর লাট-

জঙ্গলে উঁমিচাঁদ, কর্ণওয়ালিসের রাইফেল

গোলপাতার চিবুকে জন্মায় পরদেশি পোকা

চিরলবনে

বৃষ্টিরা ধুয়ে নেয় বরফের নগ্ন ঘাম

এসো সমুদ্দর, তোমাকে দেখায়

ঝড় শেষে কাঠের খাম্বাম্লান ঝাড়বাতি

ছুটে যায় স্মৃতির কাছে আস্ত দেশলাই;

 (৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ পুকুরপাড, কলাবাগান)