প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের পরিবেশ নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধ হবার এবং সতর্ক থাকার জন্য তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। কারণ, বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে। তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটি নেতা-কর্মীকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং মানুষের ভোটের অধিকার যা অনেক সংগ্রামের মধ্যদিয়ে অর্জিত সেই অধিকার যাতে নিশ্চিত থাকে, মানুষ যেন তার ভোট শান্তিপূর্ণভাবে দিতে পারে- সেই পরিবেশ রাখতে হবে।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্মরণসভায় সভাপতির ভাষণে এসব কথা বলেন। বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন বানচাল করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্রের পিছনে অনেকের হাত রয়েছে এবং তারা অনেক উপায়ে চেষ্টা করবে। তিনি বলেন, আমাদের শক্তি হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণ। নির্বাচনে আসলে ক্ষমতায় যেতে পারবেনা ভেবে নেতৃত্ববিহীন দল বিএনপি সারাদেশে সন্ত্রাস-নৈরাজ্য-জ¦ালাও-পোড়াও করতে মেতে উঠেছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান আগুন সন্ত্রাসী ও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারিদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা যে আদর্শ নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন, জাতীয় চারনেতা জীবন দিয়েছেন, স্ইে আদর্শ নিয়েই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। ঐ সমস্ত দুস্কৃতিকারি কয়েকজনের লাফালাফি এদেশে কোনদিনও নির্বাচন বানচাল করতে পারবেনা। এই দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবেনা। তিনি বলেন, ওরা জানে (বিএনপি) যে নির্বাচন করলে ক্ষমতায় আসতে পারবেনা। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তারা ৩শ’ সিটের মধ্যে মাত্র ৩০টি সিট পেয়েছিল। আর ওদের অপকর্মের জন্য মানুষতো আরো ওদের প্রতি বিমুখ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি আসলে সিট পাবেনা দেখে নির্বাচন করবে কিনা সন্দেহ। আর নির্বাচনে আসলেও আসবে ঐ নমিনেশন বাণিজ্য করার জন্য।
শেখ হাসিনা বলেন, তারা নির্বাচন কাকে নিয়ে করবে? নির্বাচন করলে ওদের নেতা কে? কাকে প্রধানমন্ত্রী করবে? কাকে দিয়ে মন্ত্রিসভা করবে? বিএনপির চেয়ারপার্সন (খালেদা জিয়া) এতিমের অর্থআত্মসাতের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার সাজাপ্রাপ্ত, মানি লন্ডারিংয়ের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত এবং ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলার দায়ে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী। সে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আর রাজনীতি করবেনা বলে মুচলেখা দিয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যায়। শোনা যায়, লন্ডনে বসে জুয়া খেলে নাকি কোটি কোটি পাউন্ড কামাই করে। এটাই তার সোর্স অব ইনকাম। আর সেখানে বসে তাঁর করে দেওয়া ডিজিটাল বাংলাদেশের সুযোগ নিয়ে জ¦ালাও পোড়াওয়ের নির্দেশ দেয়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, দলের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম ও তাজউদ্দিন আহমেদের কন্যা সিমিন হোসেন রিমি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, দলের কার্যনির্বাহী সদস্য এবং হবিগঞ্চ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডা. মুশফিক হোসেন চৌধুরী, সৈয়দ নজরুল ইসলাম কন্যা ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মান্নাফী ও উত্তর সভাপতি শেখ বজলুর রহমান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ এবং উপপ্রচার সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম স্মরণসভাটি সঞ্চালনা করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে শহীদদের স্মরণে সকলে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন।