শনিবার,

২৭ এপ্রিল ২০২৪

|

বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

XFilesBd

শিরোনাম

যুদ্ধ ব্যয়ের অর্থ জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় ব্যবহার হলে বিশ্ব রক্ষা পেত: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী প্রাণি ও মৎস্যসম্পদ উন্নয়নে বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর বিএনপি নেতারা সন্ত্রাসীদের সুরক্ষা দেওয়ার অপচেষ্টা করছে : ওবায়দুল

৭৪এ পথ চলা শুরু পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের 

তানভীর সুমন

প্রকাশিত: ০১:১৫, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

৭৪এ পথ চলা শুরু পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের 

একুশে টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী , অভিনেতা, সাংবাদিক ও লেখক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিন উদযাপন করেছে একুশে পরিবার। প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিভাগে  ফুল দিয়ে এবং কেক কেটে তার জন্মদিন পালন করা হয়।

শনিবার সকালে একুশে টেলিভিশনের কার্যালয়ে সকল কর্মীদের উপস্থিতিতে কেক কাটেন তিনি। এ সময় তাঁকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান হেড অব নিউজ রাশেদ চৌধুরী এবং প্রশাসন ও মানব সম্পদ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মেজর নাসিম হোসেন (অব.)।

উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি হেড ফাইন্যান্স বিভাগ- আবদুর রউফ, হেড অব ব্রডকাস্ট- সুজন দেবনাথ, অনুষ্ঠান প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) সাইফ আহমেদ, বার্তা বিভাগের এ্যাসাইন্টমেন্ট এডিটর রাশেদ আলী, মার্কেটিং বিভাগের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার- মো: ফেরদৌস নাঈমসহ অন্যান্যরা।

অনুষ্ঠানে সবাই এই গুণি মানুষের সাফল্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।

পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯৫০ সালের আজকের এই দিনে তিনি ফরিদপুর শহরে জন্মগ্রহণ করেন।  একাধারে নাট্যকার, আবৃত্তিকার, টিভি ও মঞ্চ অভিনেতা, সংগঠক, অনুসন্ধানী পাঠক, প্রতিশ্রুতিশীল লেখক। আশির দশকের শুরুতে ‘সকাল সন্ধ্যা’ নামক টিভি সিরিয়ালে অভিনয় করে তিনি বিপুল জনপ্রিয়তা পান। তার শিক্ষাজীবন শুরু গোপালগঞ্জের এসএম মডেল স্কুলে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে এমএ পাস করেন তিনি। ১৯৮৫ সাল থেকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে লেখালেখি শুরু করেন। এখনো মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে বাংলাদেশের প্রথম সারির প্রতিটি গণমাধ্যমে নিয়মিত কলাম লিখছেন। পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় নব্বইয়ের দশকে দৈনিক লালসবুজ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক ছিলেন। মৌলিক সাহিত্য, গল্প, উপন্যাস, নাটক, কবিতা, ছড়া এবং সম্পাদনাসহ ১৮ টি প্রকাশিত গ্রন্থ রয়েছে তার। পিয়ং ইয়ং ও উত্তর কোরিয়ায় বিশ্বছাত্র-যুব সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে যোগদান করেন তিনি। এই সম্মেলনে ১৭৫টি দেশের ২৫ লাখ প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। নিউ ইয়র্কে বঙ্গবন্ধু সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রথম প্রতিনিধি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। 

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় ফোবানা সম্মেলনে একাধিকবার অংশগ্রহণ, জার্মানির বার্লিনে আন্তর্জাতিক লোক উৎসবে যোগদান, কলকাতায় আন্তর্জাতিক কবিতা উৎসব এবং মিসরের কায়রোতে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে তিনি বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। তিনি সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের প্রতিষ্ঠাকালীন স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য। বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ শাখার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। একসময় সংগঠনটির নির্বাহী সভাপতি ছিলেন তিনি। এছাড়া বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ষাটের দশকের শেষের দিকে বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হিসেবে প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে হাতেখড়ি তার। সেই সূত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সরাসরি সাহচর্যে আসেন। একজন নাট্যজন ও ক্রীড়ানুরাগী হিসেবে শেখ কামালের ঘনিষ্ঠজন ছিলেন তিনি। ১৯৮৫ সালে এরশাদবিরোধী আন্দোলনে গড়ে ওঠা বাংলাদেশ যুবঐক্যের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং যুবসংগ্রাম পরিষদের নেতা হিসেবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ব্যাপক অবদান রাখেন। বাংলাদেশের সব যুব সংগঠন নিয়ে যুবসংগ্রাম পরিষদ গঠনে তার অনন্য ভূমিকা ছিল।ঢাকা থিয়েটার ও বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত থেকে মঞ্চনাটকে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। চলচ্চিত্র উন্নয়নেও রয়েছে তার বিশেষ ভূমিকা। আপাদমস্তক মানবিক ও প্রগতিশীল এই সংস্কৃতিপ্রাণ মানুষটির চলচ্চিত্রে অভিনয়ের শুরু মোরশেদুল ইসলাম পরিচালিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘আগামী’ দিয়ে। এরপর তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ‘একাত্তরের যীশু’ চলচ্চিত্রে পাদরির ভূমিকায় অভিনয় করেন।তিনি শক্তিশালী অভিনয়ের দ্যুতি ছড়িয়েছেন দশকের পর দশক। তাঁর ভরাট কণ্ঠের সংলাপে বুঁদ হয়েছেন দর্শক। সময়ের সাথে সাথে পরিচয়ের গণ্ডি অভিনয় থেকে বিস্তৃত হয়েছে আবৃত্তিকার, সংগঠক, অনুসন্ধানী পাঠক ও লেখক হিসেবেও।

‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’ নামের সংগঠনটি তাঁর হাতে গড়া। যেটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও  আবহমান বাংলার ঐহিক দর্শন তুলে ধরছেন সর্বস্তরে। বহু গুণে গুণান্বিত এই মানুষটি, স্বপ্ন দেখেন বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার। যার মূল ভিত্তিই হবে, অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ এক রাষ্ট্র।