বুধবার,

২৪ ডিসেম্বর ২০২৫

|

পৌষ ৯ ১৪৩২

XFilesBd

আতঙ্কে আছে সীমান্তের মানুষ

বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক উন্নয়নে যা করতে পারে উভয় পক্ষ

সুমন বিশ্বাস

প্রকাশিত: ০৪:৫৩, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক উন্নয়নে যা করতে পারে উভয় পক্ষ

২০২৫ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান কূটনৈতিক টানাপোড়েন কাটিয়ে সম্পর্ক পুনর্গঠনে উভয় পক্ষকে বাস্তবসম্মত ও ভারসাম্যপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ২০২৪ সালের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন পরবর্তী সময়ে এবং ২০২৫-এর বর্তমান প্রেক্ষাপটে সম্পর্ক উন্নয়নে প্রথম শর্ত হওয়া উচিত নিয়মিত উচ্চপর্যায়ের সংলাপ। বিশেষ করে শীর্ষ নেতাদের মধ্যে সরাসরি আলোচনা এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যায়ে নিয়মিত যোগাযোগ ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সম্পর্কের স্থিতিশীলতার জন্য ভারতের উচিত বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়ে সরাসরি মন্তব্য বা হস্তক্ষেপ এড়িয়ে সার্বভৌমত্বের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা এবং সকল রাজনৈতিক অংশীজনের সঙ্গে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সম্পর্ক গড়ে তোলা।

সীমান্ত ব্যবস্থাপনা এই সম্পর্কের অন্যতম সংবেদনশীল ইস্যু। সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক প্রাণহানি বা সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনা আস্থার পরিবেশ তৈরির জন্য অপরিহার্য। এর পাশাপাশি চোরাচালান রোধে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার এবং নিরাপত্তা উদ্বেগ নিরসনে রিয়েল-টাইম তথ্য বিনিময় জোরদার করতে হবে। জনযোগাযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভারতের উচিত সাধারণ বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া দ্রুত সহজ ও স্বাভাবিক করা, যা গত এক বছরের অস্থিরতায় অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছিল। চিকিৎসা ও শিক্ষার প্রয়োজনে ভারতগামী বাংলাদেশিদের দুর্ভোগ কমাতে বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন।দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তি এবং গঙ্গার পানি চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি বা নবায়নের বিষয়ে দ্রুত একটি বিজ্ঞানসম্মত ও ন্যায্য সিদ্ধান্তে পৌঁছানো জরুরি। পানি বণ্টন ও অভিন্ন নদীর ব্যবস্থাপনা নিয়ে স্বচ্ছতা বজায় রাখা দুই দেশের জন্যই লাভজনক হবে। এছাড়া অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ভারসাম্য রক্ষায় বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানিতে বিদ্যমান অশুল্ক বাধাগুলো দূর করা এবং বাণিজ্যিক লেনদেনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।

২০২৫ সালের সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নিরাপত্তা নিয়ে তথ্যভিত্তিক আলোচনা এবং উভয় দেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উস্কানিমূলক অপপ্রচার বন্ধে কঠোর অবস্থান নিতে হবে। দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের বক্তব্য প্রদানে সংযত হওয়া এবং বিভেদ নয় বরং সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র খুঁজে বের করার মাধ্যমেই দুই দেশের এই ঐতিহাসিক ও কৌশলগত সম্পর্ক দীর্ঘমেয়াদী ও টেকসই হতে পারে।