সংবিধান মোতাবেক আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে এবার চট্টগ্রামে মাঠে নেমেছে সামাজিক সংগঠন ‘আমরা করবো জয়’। আজ রবিবার বিকেলে নগরীর আগ্রাবাদ কনভেনশন হল থেকে ছোটপুল পর্যন্ত আয়োজিত বিশাল পতাকা মিছিল করে এ দাবি উত্থাপন করা হয়।
মিছিল-পূর্ব সমাবেশে চট্টগ্রাম মহানগর ১৪ দলের সমন্বয়ক ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্ত এবং দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাংলাদেশ একটি জাতীয় পতাকা এবং একটি পবিত্র সংবিধান অর্জন করেছে। একটি রাষ্ট্র পরিচালনার একমাত্র দিক-নির্দেশনা হচ্ছে সংবিধান। একটি জাতির জীবনধারা পরিচালিত হয় সংবিধানকে কেন্দ্র করেই। ঠিক তেমনিভাবে আগামী নির্বাচনও কিভাবে হবে সেটার স্পষ্ট উল্লেখ আছে আমাদের পবিত্র সংবিধানে। ইউরোপ, আমেরিকাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সংবিধানের ভিত্তিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং বাংলাদেশেও সেভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি আরো বলেন, ১৯৭৫ সালের কালরাত্রিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে যারা বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল তারাই সংবিধানকে পাশ কাটিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের মায়া-কান্না শুরু করেছে। যারা সংবিধানকে স্থগিত করে নতুন কোন পন্থায় নির্বাচনের দাবি করে তারা ১৯৫৮ সালের আইয়ুব খানের প্রেতাত্মা। অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন যখন আসন্ন, যখন নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে একটি জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি শুরু করেছে ঠিক সেই মুহূর্তে নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে বিএনপি-জামায়াত চক্রটি। তারা একটি গণতান্ত্রিক সরকারকে অবৈধ পন্থায় ক্ষমতা থেকে হঠাতে চায়। কিন্তু তাদের সে উদ্দেশ্য কোনভাবেই সফল হবে না। বিএনপি-জামায়াত চক্রটি প্রতিদিনই দেশের কোন না কোন জায়গায় সমাবেশের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে, জানমালের ক্ষয়ক্ষতি করছে। তাদেরকে কোনভাবেই জনগণের জানমাল নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না। একটি সরকারের পরিবর্তন নির্ভর করছে অবশ্যই নির্বাচনের ওপর। নির্বাচন ছাড়া সরকার পরিবর্তনের কোন সুযোগ আমাদের সংবিধানে উল্লেখ নেই। তারপরও সংবিধানের বাইরে গিয়ে নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রতিনিয়ত সরকারকে হুমকি ধমকি প্রদান করা হচ্ছে। যারা এসব করছে তারা দেশ ও জাতির শত্রু, তারা পবিত্র সংবিধানের শত্রু। তাদের বিরুদ্ধে দেশের সকল গণতন্ত্রকামী নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ারও আহবান জানান তিনি।
তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, যাদের দেহ এদেশে, আর আত্মা অন্যদেশে তাদেরকে চিহ্নিত করতে হবে। তারা সরকারের আপন সেজে নানারকম ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এদের বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা নেওয়ার সময় এসেছে। বাংলাদেশের ১৬ কোটি জনগণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে আছে এবং থাকবে।
পতাকা মিছিলের পূর্বে দুপুর থেকেই নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে খ- খ- মিছিলে আগ্রাবাদ এলাকা পরিপূর্ণ হয়ে যায়। মিছিলটি যখন আগ্রাবাদ এক্সেস রোডে মূল সড়কে উঠে তখন পুরো রাস্তাটিই একটি জাতীয় পতাকাতে পরিণত হয়। মিছিলের সম্মুখভাগে বিশাল জাতীয় পতাকায় সড়কটি আচ্ছাদিত হয়ে উঠে। স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়ে উঠে পুরো এলাকা।
চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম ইমরান হাসান আহম্মেদ ইমুর সভাপতিত্বে পতাকা মিছিল-পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক চন্দন ধর, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মসিউর রহমান চৌধুরী, ন্যাপ কেন্দ্রীয় সদস্য মিটুল দাশগুপ্ত, সাবেক কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম, বন্দর থানা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াছ, কাউন্সিলর আতাউল্ল্যাহ চৌধুরী, রুহুল আমিন তপন, আব্দুর রহমান মিয়া, মো. ইউনুছ, জহির উদ্দিন মো. বাবর, সাবেক ছাত্রনেতা শওকত হোসাইন, মহানগর যুবলীগের সভাপতি মাহবুবুল হক সুমন, মো. সালাউদ্দিন, কাউন্সিলর আব্দুস সালাম মাসুম, নুরুল কবির, আজম খান, কুতুব উদ্দিন, মো. ইলিয়াছ, রেজাউল করিম ইরান, সাজ্জাদ হোসেন, এনামুল হক মিলন, জাহেদ আহমদ চৌধুরী, আবুল হাসান সৈকত, ডা. অঞ্জন কুমার দাশ, কাউন্সিলর নীলু নাগ প্রমুখ।