বৃহস্পতিবার,

০২ মে ২০২৪

|

বৈশাখ ১৮ ১৪৩১

XFilesBd

শিরোনাম

যুদ্ধ ব্যয়ের অর্থ জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় ব্যবহার হলে বিশ্ব রক্ষা পেত: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী প্রাণি ও মৎস্যসম্পদ উন্নয়নে বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর বিএনপি নেতারা সন্ত্রাসীদের সুরক্ষা দেওয়ার অপচেষ্টা করছে : ওবায়দুল

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে সংখ্যালঘুর বাড়িতে পুলিশের তান্ডব

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২১:৫৭, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

আপডেট: ২১:৫৯, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে সংখ্যালঘুর বাড়িতে পুলিশের তান্ডব

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার ১২ নং জিউধরা ইউনিয়নের ডুমুরিয়া গ্রামে ২৫ ফেব্রুয়ারি রাত আনুমানিক ১ টায় বসত বাড়ির গেটের তালা ভেঙ্গে পুলিশি তান্ডব চালায়, এলোমেলো করে দেয় দেবতার বিগ্রহ সহ পূজা ও কীর্তনের সামগ্রী।

জানা গেছে, সনজিত অধিকারী, প্রসেনজিৎ অধিকারী ও তাদের পিতাঃ জ্যোতিন অধিকারি এই বাড়িতে কয়েক বছর যাবত বসবাস করছে।  ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে গ্রাম পুলিশ রনজিত মন্ডল কে সাথে নিয়ে লক্ষ্মীখালী পুলিশ ফাঁড়ির কর্মকর্তা সুফল সরকার বাড়িটির সামনে গিয়ে চিৎকার করে বাড়ির মালিকদের ডাকতে থাকে। কেউ কোন সাড়া না দিলে পুলিশ অফিসার তালা ভেঙে বাড়িটির ভিতরে প্রবেশ করে তালা বদ্ধ ঘর ও মন্দিরের একই ভাবে তালা ভেঙে ফেলে।

কোথাও কেউ না থাকায় গ্রাম পুলিশ রনজিতের মাধ্যমে তাদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে সনজিতের ভাই প্রসেনজিৎ অধিকারি কে ফোন করে জানায়, "তোমাদের বিরুদ্ধে ওসি সাহেবের কাছে অভিযোগ আছে। আমি তোমাদের বাড়ি থেকে কিছু আলামত ক্যাস্পে নিয়ে যাচ্ছি, তোমরা আগামীকাল সকাল  ১০ টায় লক্ষ্মীখালী পুলিশ ক্যাম্পে যোগাযোগ করবে"। সনজিতের ভাই প্রসেনজিৎ বিভিন্ন ভাবে তাকে বোঝাবার চেষ্টা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে তারা ওখানে পৌঁছে যেতেও চায় কিন্তু পুলিশ সুফলের ধমকিতে কোন কথাই ধোপে টেকেনি। কিছুক্ষণের মধ্যে তারা তাদের বাড়ি পৌঁছে ওখানে ছত্তার খলিফা ও মজিবর সহ কয়েক জন অপরিচিত লোককে দেখতে পায়।

সনজিতদের উপস্থিতি প্রতক্ষ করে তারা দ্রুত ঘটনা স্থল ত্যাগ করে। সনজিত, প্রসেনজিৎ সহ ওদের বাড়ি লোকেরা দেখতে পায় ইতিমধ্যে তাদের বেশ কিছু ক্ষতি হয়ে গিয়েছে, বিশেষ করে মন্দিরের দেব বিগ্রহ গুলি এলোমেলো করে ভাঙ্গা হয়েছে ঢোল, ডংকা ও তছনছ করা হয়েছে নিত্যপূজার সামগ্রী।

সনজিত অধিকারী কয়েক বছর আগে ২০১৮ সালে এখানে জমি কিনে নতুন বাড়ি তৈরি করে। একই খতিয়ান ভুক্ত জমি ক্রয় করে একই এলাকার ছত্তার খলিফা। সনজিতের ক্রয়কৃত এই জমিতে বাড়ি নির্মান কাজ শেষের দিকে চলে এলে ছত্তার দাবি করে এই জমি তার। কিন্তু সনজিত অধিকারির দলিল, দলিলের চৌহদ্দি, নামজারি সবকিছু সঠিক থাকায় স্থানীয় শালিসিতে সে জিতে যায় কিন্তু ছত্তারের হয়রানি থেকে রক্ষা পায় না। অবশেষে সনজিত আদালতের দারস্থ হয়, জারি হয় ১৪৪। কোর্টের বিচার শেষে সে রায়টিও এল সনজিত দের পক্ষে। কিন্তু কি হলো তাতে? পুলিশ সুফল সরকারের কাছে কোন আইন বিচার যে কিছুই না! কোন কিছুর থোড়াই তোয়াক্কা না করে রাতের আধারে তালা ভেঙে বাড়ি ঢুকে, বাড়ির বেড়া ভেঙে গোয়াল ঘর নির্মানের জন্য তৈরি করা চাল, খুটি নিয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে গিয়েছে। এ বড়ই অভিনব আলামত উদ্ধার! সাথে সাথে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রার্নালয়।

ইতিমধ্যে ঘটনা স্থলে পৌঁছে গিয়েছেন মোরেলগঞ্জ উপজেলা পূজা উজ্জাপন পরিষদের আহবায়ক শ্রী শংকর রায়। উপস্থিত আছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সহ সে এলাকার গন্যমান্যরা। উপস্থিত সকলে ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। মুঠোফোনে শ্রী শংকর রায় কথা বলেছেন পুলিশ সুফল সরকারের সাথে তিনি বলেছেন "আমি বাড়িটির গেট ভেঙ্গে বাড়িতে ঢুকেছিলাম, কিছু জিনিস পুলিশ ক্যাম্পে নিয়ে এসেছি ওসি সাহেবের নির্দেশে কিন্তু দেব বিগ্রহ আমি ক্ষতি করিনি"। এ কোন দেশ কোন সভ্যতা! এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে এলাকাবাসি এর প্রতিকার প্রত্যাশা করে।