চার দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান মালার মধ্য দিয়ে ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশন শ্রীরামকৃষ্ণের ১৮৯তম শুভ জন্মতিথি ও সাধারণ উৎসব আজ শেষ হয়েছে।
অনুষ্ঠানমালার প্রথম দিন মঙ্গলবার, দিনব্যাপী অনুষ্ঠানসূচীতে ছিল মঙ্গল আরতি, উষা কীর্তন, বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণ, শ্রীরামকৃষ্ণের গ্রন্থ থেকে পাঠ, শ্রীরামকৃষ্ণ সম্পর্কে আলোচনা, ভক্তিমূলক সঙ্গীত, রামকৃষ্ণ লীলাগীতি, শিশুদের নৃত্যানুষ্ঠান ।
এ দিন সন্ধ্যা আরতির পর ‘ধর্মজগতে শ্রীরামকৃষ্ণের অনন্যতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্তলাল সেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষক ড. মো. তৌহিদুল হাসান। আলোচনা শেষে অপূর্ব কুমার কুন্ডুর পরিচালনায় এবং বিবেকানন্দ থিয়েটারের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হয় নাটক ‘উত্তরণ’।
অনুষ্ঠানমালার দ্বিতীয় দিন বুধবার, দিনব্যাপী অনুষ্ঠানসূচীর শুরুতে ছিল রামায়ণ গান। পরিবেশন করেন সিবেশ^র চন্দ্র দাস ও সম্প্রদায়। এরপর অনুষ্ঠিত হয় রামকৃষ্ণ মিশন উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক অনুষ্ঠান আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এ দিন ‘স্বামী বিবেকানন্দের শিক্ষা দর্শন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি ও রামকৃষ্ণ মিশন পরিচালন পর্ষদের সভাপতি সৌমেন্দ্র সরকার, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নরসিংদী ড্রিম হলিডে পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও রামকৃষ্ণ মিশনের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য প্রবীর কুমার সাহা।
আলোচনা সভায় আশীর্বচন প্রদান করেন রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন, ঢাকা এর অধ্যক্ষ ও সম্পাদক শ্রীমৎ স্বামী পূর্ণাত্মানন্দজী মহারাজ। সন্ধ্যা আরতির পর ছিল ‘স্বামী বিবেকানন্দ ও আন্তর্জাতিক ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভা। এতে মূখ্য আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান, সভাপতিত্ব করেন রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের প্রধান স্বামী পূর্ণাত্মানন্দজী মহারাজ।
অনুষ্ঠানমালার তৃতীয় দিন বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী অনুষ্ঠান সূচীতে ছিল অমল ব্যানার্জী ও সম্প্রদায়ের পরিবেশনায় পদাবলী কীর্তন, শিশুদের নৃত্যানুষ্ঠান এবং শ্রীমা সারদাদেবী ও আধুনিকতা শীর্ষক আলোচনা সভা। আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সোমা দে এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টর আইনজীবী ব্যারিষ্টার তানিয়া আমির। সভাপতিত্ব করেন রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের প্রধান স্বামী পূর্ণাত্মানন্দজী মহারাজ।
অনুষ্ঠানমালার শেষ দিন আজ শুক্রবার ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মলীলা কীর্তন পরিবেশন করেন ড. সুজিত দাস, সমর কৃষ্ণ সাহা ও সম্প্রদায়, চট্টগ্রাম। দুপুরে অনুষ্ঠিত হয় নর-নারায়ণ সেবা। শিশু-কিশোরদের বিচিত্রানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় বিকেল ৩টায় এবং সন্ধ্যা আরতির পর বিখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী ফরিদা পারভীনের লালনগীতি এবং অন্যান্য শিল্পীদের ভক্তিগীতি পরিবেশনের মধ্য দিয়ে চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠান শেষ হয়।