শুক্রবার,

২৬ এপ্রিল ২০২৪

|

বৈশাখ ১২ ১৪৩১

XFilesBd

শিরোনাম

যুদ্ধ ব্যয়ের অর্থ জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় ব্যবহার হলে বিশ্ব রক্ষা পেত: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী প্রাণি ও মৎস্যসম্পদ উন্নয়নে বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর বিএনপি নেতারা সন্ত্রাসীদের সুরক্ষা দেওয়ার অপচেষ্টা করছে : ওবায়দুল

গুলিতে নয়, যুবদলকর্মীদের ইটের আঘাতে শাওনের মৃত্যু: পুলিশ 

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি  

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

গুলিতে নয়, যুবদলকর্মীদের ইটের আঘাতে শাওনের মৃত্যু: পুলিশ 

মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় যুবদল কর্মী শহীদুল ইসলাম শাওনের (২৩) মৃত্যু ইটের আঘাতে হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। 

বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টার দিকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান আল-মামুন এ দাবি করেন।

পুলিশ সুপার বলেন, ২১ সেপ্টেম্বর পুলিশের ওপর বিএনপির নেতা-কর্মীদের ইটপাটকেল নিক্ষেপের একপর্যায়ে যুবদল কর্মী শহিদুল ও তার সঙ্গে থাকা বিএনপির অপর এক কর্মীর পেছন থেকে ছোড়া ঢিলে আঘাত পান। তাকে আত্মীয়স্বজন চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান। পরদিন রাত আনুমানিক ৯টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে তিনি মারা যান।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে নিহত শহিদুলের লাশের সুরতহাল সম্পন্ন হয়। ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে হস্তান্তর করে। অতঃপর ফরেনসিক বিভাগ লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করতে ভিসেরা পরীক্ষা করে। ভিসেরা পরীক্ষায় কোনো বিষ নেই মর্মে মতামত দেওয়া হয়। সুরতহাল ও ভিসেরা প্রতিবেদন পর্যালোচনায় ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে মাথায় আঘাতের কারণে শাওনের মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মাথার পেছনে থেঁতলানো আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ছাড়া গান শুটের কোনো আঘাত নেই। ইটের আঘাতেই শহিদুলের মৃত্যু হয়েছে।

২১ সেপ্টেম্বরের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান আল মামুন বলেন, মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুর পুরাতন ফেরিঘাট গোলচত্বরে সদর উপজেলা বিএনপি ও মুন্সীগঞ্জ পৌর বিএনপির নেতা-কর্মীরা একটি অবৈধ অনির্ধারিত সমাবেশ ও ঝটিকা মিছিল বের করে। বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে দলীয় কোন্দলের নিজেদের মধ্যে মারামারি শুরু হলে জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। এতে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। সে সময়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা মুক্তারপুর ফেরিঘাটে শ্রমিক লীগের অফিস ভাঙচুর করতে থাকে। সেই পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা মারমুখী হয়ে ওঠে। অবৈধভাবে চারদিক থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। তাৎক্ষণিকভাবে মুক্তারপুর সেতুসংলগ্ন মুন্সীগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জ রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। বিএনপির নেতা-কর্মীদের নিক্ষেপ করা ইটপাটকেলের আঘাতে কর্তব্যরত মুন্সীগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সদর ওসি, ইন্সপেক্টর অপারেশনসহ কয়েক পুলিশ সদস্য আহত হন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার প্রাণপণ চেষ্টা করে পুলিশ। আত্মরক্ষা ও সরকারি সম্পত্তি রক্ষার্থে শটগানের রাবার কার্তুজ ও গ্যাস শেল নিক্ষেপ করে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পুলিশ সুপার বলেন, শহিদুল হত্যাকাণ্ডের ঘটনার বিষয়টি আদালতে জানিয়ে ইতোমধ্যে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। নিহত শহিদুলের পরিবারকে ন্যায়বিচার পাইয়ে দিতে তারা বদ্ধপরিকর। শহিদুলের পরিবারের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হবে।

উল্লেখ্য, জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি ও দলীয় নেতা-কর্মী হত্যার প্রতিবাদে মুন্সীগঞ্জ শহরের পাশে মুক্তারপুরে ২১ সেপ্টেম্বর বেলা তিনটার দিকে বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে জেলা বিএনপি। সেখানে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের মধ্যে গুলিতে শহিদুল ও বিএনপির সমর্থক জাহাঙ্গীর মাদবর (৩৮) গুরুতর আহত হন। পরের দিন রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শহিদুলের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দুটি পৃথক মামলা হয়। এসব মামলায় বিএনপির ১ হাজার ৩৬৫ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। দুটি মামলায় ২৪ জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

নিহত শহিদুল মুন্সীগঞ্জ উপজেলার মিরকাদিম পৌরসভার মুরমা এলাকার ছোয়াব আলীর বড় ছেলে। তিনি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক ছিলেন। পাশাপাশি মিরকাদিম পৌরসভা ৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের কর্মী হিসেবে দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতেন।