অখিল পোদ্দারের ব্যতিক্রম কবিতা
জন্মের আসমূদ্রহিমাচল
খুব ভোরে জন্ম নেয় অবোধ ফুল
ঝরে যাবার আগে
নোনা ধরা জিহ্বায়
বিষাদ আসে ধেয়ে
প্রান্তিক উঠোনে টুপটাপ
শিশির আসে
শুধু মানুষ আসে না ফিরে
উড়ে গেলে মেঘ যেমন অদৃশ্য হয়
অমর আকাশে ;
[ ১৫ নভেম্বর ২০২৫ । পোদ্দার বাড়ি, বরইচারা, খোকসা, কষ্টিয়া ]
পোক্ত মানুষের কাব্যকথা
নিশপিশ হাতের সেলাই
খুলে যায় সহজেই
পোক্ত বারান্দা দাঁড়িয়ে থাকে
মাঠ গেয়ে ওঠে মহাকাব্য ।
নিশপিশ হাতের কাঁথা
খুলে দেয় শক্ত বোতাম
পোক্ত মানুষ ছাদ হতে ছিটকে পড়ে
প্রতিবেশীর উঠোনে
মাটি গেয়ে ওঠে মহাকাব্য
নাম যার ‘রজনী এখনও বাকি।’
[ ১৪ এপ্রিল ২০২৩ । তাকসিম স্কয়ার, ইস্তান্বুল, তুরস্ক ]
এখন এমনই হয়
এ যুগেও এমন হয় -
ক্লান্ত মেয়েরা দাঁড়িয়ে থাকে
ভুয়া নাঙা মূর্খ বালকের আশে
কর্মঠ বাবারা গুমরে খাটে
বাজার হতে বিবমিশার শহরে
অথচ-
বেকার মাতে মৌজে ।
এ যুগেই এমন হয়
রাতভর বেকার মজে মৌতে
নিশিভোর দৌড় দেয় মানিব্যাগ হাতরে
মিডনাইট সান কিংবা কানাগলির শেষ বাড়িতে
মৃত্যুর আগে নিঃস্ব হয় মানুষ ।
[ ২৩ মার্চ ২০২৩ । পোর্টল্যাণ্ড, অরেগন, যুক্তরাষ্ট্র ]
দঙ্গল যুবতী ওম খুঁজেছিল স্নিগ্ধ রাতে
দস্যি রোদ খুঁজে পায় না তরতাজা যুবক
ফড়িং ঘাসফুল কিংবা দুপুরের ছায়া
মাতাতে চায় উর্বর মেয়েকে
কিন্ত কে কোথায় ?
বিকেলের স্বাদ গলে পড়ে একা
ডুবে যাওয়া সূর্য হারায় মায়াহরিণের চোখ
যুবকের নিপাট দেহে দুপুরেই রাত্রি নামে
ও কি তাতে শক্ত নয় আসক্ত মোবাইলে ?
জোছনা গলে পড়া উন্মুক্ত উঠোন
অনর্থক জেগে থাকে
নাই রূপবান কিংবা মধুমালার মূর্ছনা
প্রেত প্রেতিনী আর ভুত হওয়া শ্মশানবৃক্ষ
দুপুরের খাক রোদে ঝুমুর বাজে
নদীপাড়ে নীলপরী ঝুম, পুরোনো রেইন ট্রি
এইতো সেদিন, জ্বীন তাডুয়া জটা কবিরাজ
পড়ন্ত মাঠে ফিট খেয়েছিল পোষা যুগিনীর ঘায়ে
খুন হওয়া সুলতান এখনও ঘোড়া দাবডায়
গল্পের আসর, ভালোবাসার পায়রা
রাজা রানী আর সৈন্যসামন্ত কেবলই ভবঘুরে
নকশি মাঠ আছে, কাঁথা নাই খেতে
তাহলে ভুত পুষে কী হবে ?
সরকারি চৌকিদার যদি হাঁক না ছাড়ে !
[ ২৮ মার্চ ২০২৩ । রে মিলার পার্ক, হিউস্টন, টেক্সাস, যুক্তরাষ্ট্র ]
