সোমবার,

০৬ মে ২০২৪

|

বৈশাখ ২২ ১৪৩১

XFilesBd

শিরোনাম

হবিগঞ্জের কার ও ট্রাকের সংঘর্ষে নারীসহ নিহত ৫ যুদ্ধ ব্যয়ের অর্থ জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় ব্যবহার হলে বিশ্ব রক্ষা পেত: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী প্রাণি ও মৎস্যসম্পদ উন্নয়নে বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর বিএনপি নেতারা সন্ত্রাসীদের সুরক্ষা দেওয়ার অপচেষ্টা করছে : ওবায়দুল

বান্দরবানে ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর হত্যা: ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

বান্দরবান প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০৪:৪১, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২

বান্দরবানে ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর হত্যা: ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

বান্দরবানে ছোট্ট মিয়া (৪৫) নামে এক গরু ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর হত্যার দায়ে পাঁচ জন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং প্রত্যেককে দশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া অপরাধের সাক্ষ্য ও প্রমাণ অপসারণ করায় আসামিদের সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন বিচারক।

মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে বান্দরবানের জেলা ও দায়রা জজ মো. ফজলে এলাহী ভূঁইয়া এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন– বান্দরবান সদর উপজেলার লুলাইন হেডম্যানপাড়ার বাসিন্দা রে অং মারমার ছেলে উচিংনু মার্মা (২২), মংনুমং মারমার ছেলে উবা চিং মার্মা (৩০), থোয়াইচিং মারমার ছেলে চিং নু মং ওরফে হদা (২৩), মৃত ক্য হ্লা প্রু মারমার ছেলে মং নু মং ওরফে মং নু (৫০) এবং সদর উপজেলার লুলাইন পুর্নবাসন পাড়ার বাসিন্দা কুনাক মারমার ছেলে মং থু ওরফে মং ক্যাসিং।

এ ছাড়া রে অং মার্মা নামে একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।

রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত চিং নু মং ওরফে হদা ছাড়া বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছেন। 

জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান জানান, ভিকটিম ছোট্ট মিয়া চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ উপজেলার দিয়াকুল এলাকার মৃত আনু মিয়ার ছেলে। ভিকটিম এজাহারের প্রধান আসামি গরুর ব্যবসায়ী উচিংনু মার্মার কাছ থেকে দুই হাজার টাকা বায়না দিয়ে একটি গরু কেনেন। পরে ভিকটিম কেনা গরু আনার জন্য বাকি টাকা নিয়ে রোয়াংছড়ি উপজেলাধীন হানসামাপাড়া বাজারে যাওয়ার পর নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় মামলায় পুলিশ আসামি উচিংনু মার্মাকে ২০০৭ সালের ১২ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় বান্দরবান পৌরসভার মধ্যমপাড়া থেকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। সে সময় আসামি জানান, তিনি অপর আসামিদের সহযোগিতায় দা দিয়ে ভিকটিম ছোট্ট মিয়ার গলা কেটে হত্যা করে এবং ভিকটিমের মরদেহ ৩৪৮নং হ্লাপাইক্ষ্যং মৌজস্থা সারাম্রং ঝিরিমুখে জনৈক মংজহ্লী মার্মার বাঁশবাগানে মাটিচাপা দেয়। এ ছাড়া গরু বিক্রির পাওনা ১২ হাজার টাকাও আত্মসাৎ করেন। পরে ২০০৭ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর আসামি উচিংনু মার্মার বর্ণনা অনুযায়ী পুলিশ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটি খুঁড়ে ভিকটিম ছোট্ট মিয়ার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় একই দিন ভিকটিমের ভাই মো. আমজু মিয়া বাদী হয়ে বান্দরবান সদর থানায় এজাহার দায়ের করলে পুলিশ ২০০৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর এ ঘটনায় উসিংনু মার্মা, উবা চিং মার্মা, রে অং মার্মা, চিং নু মং প্রকাশ হদা, মং নু মং প্রকাশ মং নু এবং মং থু প্রকাশ মং ক্যাসিংকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করে। আদালত রাষ্ট্রপক্ষের ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের পর এ রায় দেন। মামলার বাদী মো. আমজু মিয়া রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।

জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মো. ইকবাল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘আসামিরা গরু বিক্রির কথা বলে ভিকটিমকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যায়। এরপর বিক্রিত গরু না দিয়ে ভিকটিমের কাছ থেকে ১২ হাজার টাকা আত্মসাতের জন্য তাকে অপহরণ করে গলা কেটে হত্যা করে। এ ঘটনায় দায়ের মামলায় সাক্ষ্য-প্রমাণে বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। আদালতের বিচারক আসামিদের দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে এ দণ্ডের আদেশ দেন।’

পরে আদালতে উপস্থিত একমাত্র আসামি চিং নু মং প্রকাশ হদাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়।